সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার ঠিক পাঁচদিন আগেই আত্মহত্যা করেন অভিনেতার প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ান। দুজনের মৃত্যুর যোগসূত্র সম্পর্কে পুলিশ কোনও মন্তব্য না করলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিশা সালিয়ানের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানান কাঁটা ছেড়া চলেছে। দিশা নাকি অভিনেতা সূরজ পাঞ্চলির সন্তানের মা হতে যাচ্ছিলেন সেইরকম একটি পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায় ফেসবুকে। গোটা ঘটনায় একদিকে হতভম্ব তেমনি বীতশ্রদ্ধ সদ্য মেয়েকে হারানো দিশার বাবা-মা। এই প্রসঙ্গ নিয়ে এবার মুখ খুললেন তাঁরা। সোমবার দিশার পরিবার ও বন্ধুদের তরফে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ্যে আনা হল। যেখানে দিশার মৃত্যু নিয়ে চলা মাথামুন্ডুহীন ভুয়ো গল্প, চক্রান্তের তত্ত্বের প্রচার বন্ধ রাখবার আর্জি জানাল তাঁরা।
চিঠিতে বলা হয়,
আপনারা যাঁরা এটা পড়ছেন তাঁরা হয়ত অনেকে দিশাকে জানেন আবার অনেকেই জানেন না। তবে আমাদের মধ্যে একটা জিনিস কমন, আমরা সকলেই মানুষ,আমাদের অনুভূতি আছে। সেই কারণেই আশা করছি আপনারা আমাদের যন্ত্রণাটা বুঝতে পারবেন। আমরা আমাদের ভালোবাসার একজন মানুষকে হারিয়েছি। সেই হারানোর যন্ত্রণাটা অত্যন্ত গভীর। সেটার সঙ্গে ধাতস্থ হতে অনেক সময় লাগবে,এখনও আমরা সেই যন্ত্রণার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সেই সময়ই একাধিক অপ্রয়োজনীয় ভুয়ো খবর,চক্রান্তের তত্ত্ব আমাদের কানে আসছে, এগুলো শুধু মিথ্যা তা নয়, এগুলো ওর বাবা-মা এবং কাছের মানুষের জন্য প্রচন্ড কষ্টদায়ক।
আপনাদের সকলের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ দয়া করে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনওরকম ফেক খবর ছড়ানোয় অংশ নেবেন না বা সেটাকে সমর্থন জানাবেন না। কিছু মানুষ তাঁদের মনুষ্যত্ব হারিয়ে মানুষের মৃত্যুর ফায়দা লুটের চেষ্টায় রয়েছে নিজেদের স্বার্থ, তাদের সফল হতে দেবেন না।
দিশা কারুর মেয়ে, কারুর বোন, কারুর বন্ধু ছিল। আপনাদের জীবনেও কেউ না কেউ আছে যাঁরা এই ভূমিকা পালন করে। তাঁদের দিকে তাকান, একবার ভাবুন আমাদের অবস্থাটা। সহমর্মিতা হল এমন একটা গুণ যা আমাদের মানুষ হতে সাহায্য করে। তাই সবার আগে সেই ধর্ম পালন করুন। দয়া করে ওকে শান্তিতে থাকতে দিন। উদারতা ভাগ করে নিন'।
প্রসঙ্গত এই বিতর্ক নিয়ে বম্বে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে অভিনেতা সূরজ পাঞ্চলি জানান, দিশা কে আমি তাই জানি না,আমি জীবনে ওঁর সঙ্গে কোনওদিন দেখাই করিনি। সুশান্তের মৃত্যুর পর আমি প্রথম জানতে পারলাম ওর কথা।আমার ওঁর পরিবারের কথা ভেবে খুব খারাপ লাগছে।কেউ ফেসবুকে জনপ্রিয়তা পেতে ছবির চিত্রনাট্য তৈরি করে যা খুশি তাই লিখে দিয়েছে-আর কী বলব! আমার সেই মেয়েটার পরিবারের কথা ভেবে বেশি খারাপ লাগছে, ওর বাবা-মা,ভাই-বোনেদের কথা কেউ ভাবল না একবার এইসব কথা লেখবার আগে? আমার চরিত্র নিয়ে টানাটানি করছে সেটা নয় ছেড়ে দিলাম কিন্তু সে আজ আমাদের মধ্যে নেই-ওর সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন?'
সূরজের এই বক্তব্যকেই এদিন শিলমোহর দিয়ে দিল দিশা সালিয়ানের পরিবার।