সদ্য ছেলে হারা ৭৪ বছর বয়সী কেকে সিং-এর বিরুদ্ধে শিবসেনা নেতা তথা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের কুরুচিকর মন্তব্যের বিরুদ্ধে আগেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল সুশান্ত সিং রাজপুতের পরিবার। ক্ষমা না চাইলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল, অবশেষে সেই কাজই করলেন সুশান্তের দাদা নীরজ সিং বাবুল। সুশান্তের এই খুড়তুতো দাদা আইনি নোটিশ পাঠালেন শিবসেনার রাজ্যসভার সাংসদকে। সেখানে বলা হয়েছে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে সঞ্জয় রাউতকে, নাহলে তাঁর বিরদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে,খবর টাইমস নাও সূত্রে।
রবিবার শিবসেনার মুখপত্র সামনায় সুশান্তের পরিবারকে নিয়ে বেশকিছু 'অসম্মানজনক' এবং ভুয়ো মন্তব্য করেন শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত। শিবসেনার মুখপত্র সামনার সহকারী সম্পাদক পদে রয়েছেন রাউত। তিনি বলেন, বাবার সঙ্গে সুশান্তের সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না। ‘এটা সত্যি, কতবার পটনা গিয়ে সুশান্ত তাঁর বাবার সঙ্গে দেখা করেছেন? আমার পূর্ণ সহমর্মিতা রয়েছে ওঁনার বাবার সঙ্গে’। এখানেই থেমে থাকেননি রাউত। তিনি বলেন, সুশান্তের বাবার দ্বিতীয় বিয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি সুশান্ত,তাই বাবা-ছেলের সম্পর্কে ফাটল ধরে ছিল। শুধু তাই নয় সুশান্তের প্রাক্তন বান্ধবী অঙ্কিতা লোখান্ডেকেও আক্রমণ করেন সঞ্জয় রাউত। বলেন,কেন অঙ্কিতা ব্রেক-আপ করেছিলেন সুশান্তের সঙ্গে সেটাও তদন্তের অংশ হওয়া উচিত। একটা আত্মহত্যার সঙ্গে রাজনীতিকে জুড়ে দেওয়া কোনওদিনই ঠিক নয়।
কেকে সিংয়ের ভাইপো নীরজ স্পষ্ট জানান, বাবা-ছেলের মাঝে খারাপ সম্পর্ক ছিল এটা সম্পূর্ন ভুল কথা।পাশাপাশি কেকে সিংয়ের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে সঞ্জয় রাউত যে কথা বলেছেন তা ভিত্তিহীন এবং অসম্মানজনক।২০০২ সালে সুশান্তের মা ঊষাদেবী মারা যাওয়ার পর কোনওদিনই দ্বিতীয় বিয়ে করেননি কেকে সিং, সেই কথা ভাবেনওনি কখনও। তাই নীরজ সিং বাবুল আগেই জানিয়েছিলেন, সঞ্জয় রাউত ক্ষমা না চাইলে, মানহানির মামলা করা হবে। সুশান্তের পরিবারের দাবি প্রয়াত অভিনেতার বাবার চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে শিবসেনার তরফে, তা অত্যন্ত নক্কারজনক।
গত ১৪ জুন মুম্বইয়ের বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ। এই মামলার তদন্ত নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে মুম্বই পুলিশ ও মহারাষ্ট্র সরকার। অন্যদিকে পাটনা পুলিশের কাছে সুশান্ত মৃত্যুর জন্য রিয়া চক্রবর্তীকে দায়ি করে এফআইআর দায়ের করেছিলেন সুশান্তের বাবা কেকে সিং। বিহারের সরকারের সুপারিশে কেন্দ্রের সিলমোহর পড়বার পরে এই মামলা আপতত রয়েছে সিবিআইয়ের জিম্মায়। এই মামলায় বিহার পুলিশের জুরিসডিকশনের বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। গতকাল যে পিটিশনের শুনানিতে সবপক্ষের মত শোনবার পরেও রায় সংরক্ষণ করে রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত।