রুপোলি পর্দার উজ্জ্বল তারকা আচমকাই নিভে গেল রবিবার। এই নিভে যাওয়াটা কোনও স্বাভাবিক যাওয়া নয়-আত্মহত্যা। তাই সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুটা মেনে নিতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে দেশবাসীর। ৩৪ বছরের এই সফল,প্রতিভাবান তারকার সঙ্গে কী এমন ঘটল যে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন সুশান্ত? জবাব অধরা। যদিও গত কয়েকমাস ধরেই ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন সুশান্ত,তেমনটাই জানা যাচ্ছে। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে নাকি সেই সংক্রান্ত বেশকিছু ওষুধও উদ্ধার হয়েছে। বান্দ্রার জোগার্স পার্কের মাউন্ট ব্ল্যাঙ্ক অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন সুশান্ত। দোতলা এই অ্যাপার্টমেন্টে দুইজন কুক, একজন পরিচারকের সঙ্গে থাকতেন সুশান্ত। রবিবার রাত থেকেই তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে ছিল এক বন্ধুও।
সকাল ৬.৩০টায় ঘুম থেকে উঠেন সুশান্ত সিং রাজপুত।
সকাল ৯.০০- টায় ফোনে দিদির সঙ্গে কথা হয় সুশান্তের। খুব অল্প সময়ই কথা বলেছিলেন সুশান্ত।
সকাল ১.০০- প্রত্যেক দিনের মতো সুশান্ত বেদানার জুসের গ্লাস পরিচারকের কাছ থেকে নেন সুশান্ত এবং নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
সকাল ১০.৩০- সুশান্তের কুক অভিনেতার কাছে গিয়েছিলেন দুপুরে কী রান্না হবে তা জানতে,দরজা ধাক্কা দিলেও ভিতর থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বেলা ১২.০০- দ্বিতীয়বার কুক সুশান্তের দরজার কাছে গিয়ে ডাকাডাকি করেন কিন্তু দরজা খোলেনি। তখন সে বেশ খানিকটা ঘাবড়ে যায়।
দুপুর ১২.৩০- সুশান্তের দিদিকে ফোন করে সবকিছু জানায় পরিচারক। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশ স্টেশনেও।
দুপুর ১.১৫- স্থানীয় এক চাবিওয়ালেকে ডেকে দরজার লক ভাঙা হয়, তখনই সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় পরিবার,ততক্ষণে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুশান্তের দিদি মিতু সিংও।
জানা গিয়েছে শনিবার মধ্যরাত্রির পর পবিত্র রিসতা টিমের এক পুরুষ সহকর্মী তথা কাছের বন্ধুকে ফোন করেছিলেন সুশান্ত সিং,তবে ফোনে কথা হয়নি।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে সুশান্তের মৃত্যুর কারণ ‘হ্যাংগিং’, খবর এনডিটিভি সূত্রে। অর্থাত্ ঝুলে পড়বার কারণেই মৃত্যু হয়েছে অভিনেতা। জানা গিয়েছে সুশান্তের বেশ কিছু অঙ্গের নমুনা পাঠানো হয়েছে কালিনা ফরেনসিক ল্যাবে। তাঁর শরীরেরর কোনও অঙ্গে বিষ রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
ছোট থেকেই অ্যাস্ট্রোনট হতে হতে চাইতেন সুশান্ত সিং রাজপুত।অনন্ত মহাকাশ ছোট থেকেই হাতছানি দিত তাঁকে। পড়াশোনায় বরবারই তুখোড় ছিলেন সুশান্ত। এম মেধাবী ছাত্র দেশের ১১ ইঞ্জিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা হেলায় পার করেছিল। তাঁর একটি টেলিস্কোপও ছিল। ২০১৮ সালে বোয়িং ৭৩৭ ফিক্সড বেস ফ্লাইট সিমুলেটরও কিনেছিলেন তিনি। মৃত্যুর মূহূর্তেও মহাকাশচারী হওয়ার সেই স্বপ্নকে বোধহয় বাঁচয়ি রাখতে চেয়েছিলেন। তাঁর পরনে ছিল একট আন্তর্জাতিক স্পেস ইউনিভার্সিটির টি-শার্ট। সব স্বপ্ন রয়ে গেল….শুধু সুশান্ত আর নেই।