PATNA : মুকেশ কুমার মিশ্রা-
'দয়া করে বাবার যত্ন নিন,ওঁনার খেয়াল রাখুন এই করোনা ভাইরাসের সময়টায়',তিন দিন আগে পাটনার বাড়িতে ফোন করে পরিচারিকা লক্ষ্মী দেবীকে ঠিক একথাই বলেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। সেইদিনই ফোনে বর্ষীয়ান বাবা কেকে সিংয়ের সঙ্গে কথা হয় প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের। ফোনে স্বাভাবিকভাবেই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন সুশান্ত। অভিনেতার অবসাদগ্রস্ত হওয়ার কোনও লক্ষ্ণন ফোনে ধরা পড়েনি,জানিয়েছে পরিবার। বরং এই কঠিন সময়ে বাবার স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত ছিলেন পর্দার এম এস ধোনি।
রবিবার দুপুরে মধ্যাহ্নভোজে বসেছিলেন কেকে সিং,সেই সময় মুম্বই থেকে ফোন আসে,ভেবেছিলেন ছেলে ফোন করছে,ঘুণাক্ষরেও এই বৃদ্ধ মানুষটি বুঝে উঠতে পারেননি ছেলের মৃত্যু সংবাদ আসবে ফোনের ওইপার থেকে। সুশান্তের মৃত্যুর খবর শোনা মাত্র জ্ঞান হারান তাঁর বাবা। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনও ভাষা নেই পরিবারের অনান্য সদস্যদের কাছেও।জানা গিয়েছে তাঁর অবস্থা রীতিমতো সঙ্গীন।ইতিমধ্যেই চণ্ডীগড় থেকে পাটনার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন সুশান্তের দিদি।
কেকেসিংয়ের একমাত্র পুত্র সুশান্ত সিং রাজপুত। এদিন দুপুরে বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৮ বছর আগে মৃত্যু হয় সুশান্তের মায়ের। সুশান্তের চার বোন রয়েছে। সুশান্তের মৃত্যুর খবর চাউর হতেই পাটনার ৬ নম্বর রাজীব নগর রোডের বাড়িতে ব্যাপক ভিড় জমা হয়ে যায়। ভিড় সমালাতে বাইরে থেকে তালাবন্ধ করে দিতে হয় পুলিশকে। সেখানে পৌঁছেছেন বিজেপি বিধায়ক সঞ্জীব চৌরাশিয়াও। তিনি বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা, সুশান্ত সিং রাজপুত আমাদের বিহারের গর্ব। একজন এত প্রতিভাশালী অভিনেতা…অকালে চলে গেলেন'।
সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনাকে প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যা বলেই মনে করছে পুলিশ,যদিও অন্য সুর তাঁর মামা আরপি সিংয়ের গলায়। তাঁর অভিযোগ, এটা আত্মহত্যা নয়, এটা ঠান্ডা মাথায় করা খুন। আমি চাই গোটা বিষয়ের পূর্ণ তদন্ত হোক। সুশান্ত আত্মহত্যা করতে পারে না'।
দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাটনার স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন সুশান্ত। এরপর দিল্লিতে যান মেকানিক্যাল ইঞ্জিয়ারিং নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য। যদিও সুশান্তের ইচ্ছা ছিল অস্ট্রোনট হওয়ার। কিন্তু সবই অধরা থেকে গেল,ভাগ্যের খেলায় গ্ল্যামার দুনিয়ায় চলে এলেন। শুরু হল তাঁর অভিনয় জীবন।
রবিবার সকালে বান্দ্রায় (ওয়েস্ট) নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁর দেহে ময়নাতদন্তের জন্য কুপার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।সূত্রের খবর, সুশান্ত সিং রাজপুতের পরিচারক পুলিশে খবর দেন। সুশান্ত সিং রাজপুতের বাড়ি থেকে কোনও সুইসাইড পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মুম্বই পুলিশ।