সুশান্তের পোষ্যপ্রেমের কথা কারুরই অজানা নয়। বিশেষত সারমেয়র প্রতি অদ্ভূত টান ছিল সুশান্তের। ফাজের সঙ্গে কাটানো সুশান্তের নানান মুহূর্তের ঝলক হামেশাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুটে উঠত। সুশান্তের সারাক্ষণের সঙ্গী ফাজ ভেঙে পড়েছিল তাঁর প্রভুর মৃত্যুতে। মন মরা ফাজের নানান ভিডিয়ো এবং ছবি সুশান্তের মৃত্যুর পর ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। আপতত সুশান্তের বড়দি নীতু সিংয়ের বাড়িতে রয়েছে ফাজ। সেখানে ফাজকে ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখছে সুশান্তের পরিবার।
তবে ফাজ ছাড়াও আরও তিন সারমেয় রয়েছে সুশান্তের। রটউইলার প্রজাতির এই তিন কুকুর থাকে সুশান্তের লোনাভালার ফার্ম হাউজ। সময়-সুযোগ পেলেই মুম্বই শহরের কোলাহল থেকে দূরে এইখানে ছুটে যেতেন সুশান্ত। সেখানেই থাকে সুশান্তের আদরের সেই তিন সারমেয় ‘অমর-আকবর-অ্যান্টনি’। বলিউড পাগল সুশান্ত জনপ্রিয় হিন্দি ছবির নামানুসারেই নাম রেখেছিলেন তাঁর তিন সারমেয়র। সংবাদ সংস্থা আইএএনসকে এই ফার্ম হাউজের কেয়ার টেকার জানিয়েছেন দীর্ঘদিন সুশান্তের দেখা না পেয়ে মন খারাপ তাঁদের। তাই ভালো কোনও পরিবারের হাতে এদের তুলে দিতে চান তিনি।
কেয়ারটেকার রইস বলেন, যখন ১৪ জুন দুপুরে আমি সুশান্ত স্যারের আত্মহত্যার খবর দেখলাম আমি তো শুরুতে বিশ্বাসই করতে পারিনি যে চোখে কী দেখছি! একদিন আগেই তো আমাকে উনি টাকা পাঠালেন, ওঁনার তিনটি সারমেয় অমর,আকবর, অ্যান্টনির দেখাশোনার জন্য'।
রইস যোগ করেন সুশান্ত এই ফার্ম হাউজটি ভাড়া নিয়েছিলেন ২০১৮ সালে, তবে এটি কেনবার ইচ্ছা ছিল তাঁর। ‘এই ফার্ম হাউজের সঙ্গে ওঁনার চুক্তি ২০২০, মে মাসে শেষ হয় তবুও জুন এবং জুলাই মাসের সব পেমেন্ট উনি করে দিয়েছিলেন’, যোগ করে রইস।
এখানে শেষ কবে এসেছিলেন সুশান্ত? কেয়ারটেকার বলেন, মার্চ মাসের পরেই সুশান্ত দু-তিন মাস এখানে থাকার পরিকল্পনা করেছিলেন বটে, জানিয়েছিলেন সে কথা, তবে লকডাউন শুরুর পর আর আসেননি।রইসের কথায় রিয়া এবং তাঁর বাবা ইন্দ্রজিত্ চক্রবর্তীর জন্মদিন পালন হয়েছে এই ফার্ম হাউজে। কেয়ারটেকার জানায়, জানুয়ারিতে রিয়াকে নিয়ে এসেছিলেন এখানে, নিজের জন্মদিনের সময়। স্যামুয়েল মিরান্ডা, শ্রুতি মোদীরাও এসেছিল। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহেই শেষ লোনাভালায় যান সুশান্ত।
এখন লোনাভালার ফার্ম হাউজ ফাঁকা। অমর, আকবর, অ্যান্টনির মনও খুব খারাপ এতদিন ধরে সুশান্তকে না দেখতে পাওয়ায়। আপতত তাদের সামলাচ্ছেন রইস। জানিয়েছেন, তাঁর ইচ্ছা এই তিনজন অবলাকে যদি কেউ ভালোবেসে দত্তক নেয়, তাদের একটা আদরের বাড়ি দেয় সেটাই তাঁর প্রার্থনা।