সুশান্ত সিং রাজপুত শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না। তাঁর জগত ছিল মহাকাশ অবধি বিস্তৃত। সুশান্তের মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কিত একের পর তথ্য যতই সামনে এসেছে ততই অবাক হয়েছেন দেশবাসী। সুশান্তের এই বহুমুখী প্রতিভা সম্পর্কে অনেকেই একেবারেই অবগত ছিলেন না। তাঁদের কাছে সুশান্ত সিং রাজপুত ছিলেন শুধুই একজন অভিনেতা মাত্র। সুশান্তের কাছের বান্ধবী রোহিনী আইয়ারও সুশান্তের মৃত্যুর পর নিজের ইনস্টা পোস্টে জানিয়েছিলেন বলিউড সুশান্তের জীবনের ২০ শতাংশ মাত্র! এবার পিঙ্কভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে অভিনেতার এক প্রযোজক বন্ধু সুশান্তের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরেই সুশান্ত কোডিং শিখছিল নিজের বান্দ্রার পেন্ট হাউসে বসে। নিজের কোডিং স্কিল আরও উন্নত করতে অনলাইনে রীতিমতো ক্লাস করছিলেন সুশান্ত। শেখার প্রতি চরম আগ্রহ ছিল সুশান্তের, তাঁর স্মৃতিচারণায় সকলেই এই কথা বারবার জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুশান্তের এক প্রযোজক বন্ধু জানিয়েছেন, ও একটা কম্পিউটার গেম তৈরির প্ল্যান করছিল ওর বিজনেস পার্টনারের সঙ্গে। ও অসম্ভব মেধাবী ছিল এবং নিজের গেম তৈরি করতে চেয়েছিল, আর্টিফেসিয়াল ইন্টিলেজেন্সের ব্যাবহার করে। শেষ কয়েক মাস ধরে কোডিং নিয়েই ওর মাথাব্যাথা ছিল, ও ভীষণ তাড়াতাড়ি সব জিনিস রপ্ত করে নেয়। ওর মাথা সায়েন্স আর টেকনোলজির ভান্ডার ছিল। আর এই কম্পিউটার গেমটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ওর বিজনেস পার্টনারের সঙ্গে সুশান্ত করেছিল। এই বছরের শেষের দিকেই কম্পিউটার গেমটার বিস্তারিত ডিজাইন তৈরি হয়ে যাবার কথা ছিল। শুধু তাই নয় একটা প্রিন্টারের ডিজাইন প্ল্যানিংয়েরও পরিকল্পনা ছিল সুশান্তের। যেই প্রিন্টারটা শুধুমাত্র কোন জিনিস স্ক্যান করেই প্রিন্ট করতে সফল হবে। ওর মাথায় অনেক ভাবনা ছিল, ও চাইত সেগুলো বাস্তবাতিত করতে'।
উল্লেখ ২৭ এপ্রিল সুশান্ত নিজের ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেলে এই সংক্রান্ত একটি পোস্টও করেন। অনুরাগীদের জানান নিজের কম্পিউটার কোডিং শেখার কথা। লেখেন, ‘আমি কম্পিউটার গেমিং ভালোবাসি এবং সবসময় এর পিছনের ভাষাটা শিখতে চাইতাম। তাই শেষ কয়েক সপ্তাহ ধরে আমি কোডিং শিখছি, এবং এটা একটা দুর্দান্ত শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা,তা সত্ত্বেও এখনও শুধু সারফেসের উপরের ঘোরফেরা করছি.. এর জন্য খান অ্যাকাডেমিকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়..একটা বিশ্বমানের অনলাইন প্রশিক্ষণ সবার জন্য তাও একদম বিনামূল্যে,দুর্দান্ত’।
ভবিষ্যত শিক্ষার ক্ষেত্রে কোডিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হতে চলেছে। সে কথা নিজের বহু সাক্ষাত্কারে বলেছেন সুশান্ত।
শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন নলেজ স্ট্রাকচার তৈরি খুব জরুরি,সে কথা বলিউড হাঙ্গামাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারেও জানিয়েছিলেন সুশান্ত। কোডিংয়ের ভাষার প্রতি চরম আকর্ষন ছিল সুশান্তের। লকডাউনের সময়টায় কম্পিউটার কোডিং-এই মন দিয়েছিলেন অভিনেতা। সত্যি শুধু একজন বলিউড অভিনেতা নয়,বিজ্ঞান-প্রযুক্তির এক সাধককেও হারাল এই দেশ।