মহেন্দ্র সিং ধোনির বায়োপিকে যে অবলীলার সঙ্গে পর্দার ধোনি হয়ে উঠেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত, তার সাক্ষী গোটা বিশ্ব। তবে মাহির হেলিকপ্টার শট রপ্ত করেই থেমে যাননি সুশান্ত। বাঁ হাতেও ক্রিকেট খেলার প্র্যাকটিস তিনি চালিয়ে গেছেন বরাবরষ তার জন্য একটা বিশেষ কারণও ছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিক তৈরি করতে চেয়েছিলেন সুশান্ত। নিজের মুখেও একাধিক বার সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রয়াত তারকা। এনফোর্স ডিরেক্টরেটের জিজ্ঞাসাবাদের সময় এই তথ্যই আরও একবার সামনে আনলেন সুশান্তের বিজনেস পার্টনার বরুণ মাথুর।
বুধবারের পর আজ বৃহস্পতিবারও সুশান্তের বিজনেস পার্টনার বরুণ মাথুরকে জেরা করছে ইডি। এদিন বরুণের পাশাপাশি হাজির হয়েছেন সুশান্তের কোম্পানি ইনসাই ভেনচার্সের অপর ডিরেক্টর সৌরভ মিশ্রাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। সুশান্তের মৃ্ত্যু মামলার সঙ্গে যুক্ত আর্থিক তছরুপের দিকটি খতিয়ে দেখছে ইডি।
সূত্রের খবর ইডিকে বরুণ জানিয়েছেন, ইনসাই ভেনচার্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির ভিত্তি করে ছবি তৈরি করতে চেয়েছিলেন সুশান্ত ভারতের ১২ জন মহান ব্যক্তিত্বকে নিয়ে, সেই তালিকায় রয়েছে স্বামী বিবেকানন্দ, মাদার টেরেসা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধীর নাম। সেই ভিআর ফিল্মে সুশান্তই ওই ১২ চরিত্রে অভিনয় করত, এই ভাবনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কেউ কখনও কাজ করেনি।
বরুণ নিজের বয়ানে জানিয়েছেন এই ভিআর ফিল্মটি ছাড়াও সুশান্ত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বায়োপিক নিয়ে কাজ করতে চাইছিলেন সুশান্ত। এই মর্মে একটি বৈঠকও হয়েছিল, তবে তারপর আর কথা এগোয়নি। ছবিতে সৌরভের চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিল সুশান্ত।
২০১৮ সালে কলকাতায় একটি বিজ্ঞাপনী শ্যুটের ফাঁকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সুশান্ত। সেই ছবিও টুইট করে সুশান্ত লিখেছিলেন, ‘এক্সাইটমেন্ট ধরে রাখতে পারলাম না, এক্সপ্রেশনটাও ঠিকভাবে দিতে পারলাম না আমি দাদার সঙ্গে ছবির তোলবার সময়, দয়া করে ক্ষমা করে দেবেন। উফ কী দুর্দান্ত একটা মানুষ, চিরকালের অন্যতম সেরা…’।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ইনসাই ভেনচার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামের এক কোম্পানি স্থাপন করেন সুশান্ত-বরুণ। আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টালিজেন্সের উপর কাজ করবার ভাবনার নিয়েই এই কোম্পানি শুরু হয়েছিল।
কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে এই কোম্পানির অফিস রেজিস্ট্রার করা রয়েছে বি-২০৪, দ্য হুডা কো-অপারিটভ, জিএইচ-১, সেক্টর-৫৬, গুরুগ্রামে।
শুরুতে এই কোম্পানির দুজন ডিরেক্টর ছিল- সৌরভ মিশ্রা এবং বরুণ মাথুর, সুশান্ত ডিরেক্টর পদে যোগ দেন ২০১৮ সালের মে মাসে। বরুণ জানিয়েছে সুশান্ত এই কোম্পানিতে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন এবং ট্রাভেল ও অনান্য আরও কিছু খরচ নিজের থাকতে করেছিলেন। কোম্পানিটি পরবর্তী সময় বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সুশান্তের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা খৈমানিকে আইনি কাগজপত্র পাঠিয়েছিলেন বরুণ, কারণ শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় এই কোম্পানির কাজ থমকে ছিল। যদিও সেটি শেষমেষ হয়ে উঠেনি। অর্থাত্ এই কোম্পানির স্ট্যাটাস এখনও অ্যাক্টিভ।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে রিয়া চক্রবর্তী ও তার বাবা ইন্দ্রজিত্ চক্রবর্তীকে নিয়ে ভিভিডরেজ রিয়ালিটেক্স প্রাইভেট নামের এক কোম্পানি স্থাপন করেন সুশান্ত। আশ্চর্যজনকভাবে এই কোম্পানিটিও আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টালিজেন্স, ভার্চুয়াল রিয়ালিটি নিয়ে কাজ করবার উদ্দেশ্যই শুরু করেছিলেন সুশান্ত।