‘দিলবর দিলবর’ হোক কিংবা ‘মেহবুব মেরে’, ছবির নাম দর্শকের মনে না থাকলেও আজও দর্শকদের মনে ও স্মৃতিতে তাজা এই গান। তার একটি কারণ যদি এইসব গানের মন মাতানো সুর হয় তবে অন্যটি হলফ করে বলা যায় সুস্মিতা সেন। গানগুলির ভিডিয়োতে লাস্যময়ী সুস্মিতার নাচ দেখে কোনও পুরুষ দর্শকের বুক কাঁপেনি, এমন ঘটনা বিরল। সেই গানগুলোয় কাজ করে আজও দারুণ গর্বিত করেন তিনি, এমন কথাই সম্প্রতি জানালেন এই প্রাক্তন 'মিস ইউনিভার্স' স্বয়ং।
নব্বই দশকের শেষের দিকে বিভিন্ন ছবিতে একের পর এক আইটেম নাচ নেচে আসমুদ্রহিমাচল কাঁপিয়েছিলেন সুস্মিতা। জানিয়ে রাখা ভালো, সেই সময়ে কিন্তু বলিউডের বেশির ভাগ জনপ্রিয় ও প্রথম সারির অভিনেত্রীই এই ধরনের গানে নাচতে চাইতেন না পর্দায়। অবশ্য সুস্মিতা কবেই বা ধরাবাঁধা নিয়মে চলেছেন? স্বভাবতই এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ছিলেন তিনি। আইটেম গার্ল হিসেবে বেশ কিছু জনপ্রিয় গানে তাঁর উপস্থিতি সেই গানটিকে আরও ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চড়চড় করে বাড়িয়ে দিয়েছিল তাঁর নিজের জনপ্রিয়তাও। তাঁর তন্বী শরীরে, লাস্যময়ী রূপ ও আকর্ষণীয় নাচের ভঙ্গিমায় মোহিত হয়েছিলেন দর্শকের দল।
প্রায় তিন দশক পর এবার সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলেন সুস্মিতা। ফিল্ম কম্প্যানিয়ন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, 'সেই সময়ে বলিপাড়ার প্রথম সারির নায়িকারা আইটেম নম্বর করতে এগিয়ে আসতেন না। কারণ? তাঁদের নায়িকার ইমেজ খারাপ হয়ে যাবে। অন্যরা যেখানে রাজিই হত না, সেখানে আমি প্রযোজক-পরিচালকদের কাছে গিয়ে রীতিমতো হাত তুলে বলতাম আমাকে আইটেম গানে নিন। সোজা কথায়, আইটেম গান দেওয়ার আর্জি জানাতাম।'
তবে এর খেসারতও দিতে হয়েছিল তাঁকে। সুস্মিতা নিজেই জানিয়েছেন ওই পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে তাঁর দুই ম্যানেজার কাজ ছেড়ে দেন। সেই ম্যানেজার দু'জনের যুক্তি ছিল যেখানে সুস্মিতার জন্য নায়িকার চরিত্র জোগাড় করার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তাঁরা, সেখানে সুস্মিতা আইটেম নম্বরে রাজি হয়ে গিয়ে তাঁদের সেই চেষ্টা ভণ্ডুল করে দিচ্ছে। এটা একেবারেই ঠিক করছে না সে। সুস্মিতার জবানিতে, 'আমরা এত বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আছি আর তুমি আমাদের কথা শুনছ না। আমরা জানি এখানে কীভাবে সব চলে। আর সেখানে তুমি আমাদের গুরুত্বই দিচ্ছ না।' ওঁদের বিপক্ষে সুস্মিতার সাফাই ছিল, ভালো সুর মানে দিনের শেষে তা ভালোই সুর। গান যদি ভালো হয় তাহলে ছবি না চললেও তার জনপ্রিয়তা থেকে যাবে।