তিনি একের পর এক সুপারহিট বাংলা ছবি উপহার দিয়েছেন বাংলা সিনে প্রেমীদের। তাঁর হাত ধরেই বাংলা ইন্ড্রাস্টি পেয়েছে 'বাবা কেন চাকর' থেকে শুরু করে ‘মিনিস্টার ফাটাকেষ্ট’-এর মতো জনপ্রিয় সব বাংলা ছবি। সেই নির্মাতা ও পরিচালক স্বপন সাহাকে এবার 'বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল'-এ 'লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট' সম্মানে ভূষিত করা হল।
এক সময় তাঁর ছবি দেখার জন্য দর্শকদের হলে জায়গা দেওয়া যেত না, প্রতিটি শো হত হাইজফুল। কেবল শহর বা মফস্বল নয় গ্রামাঞ্চলেও ধরা পড়ত এই একই দৃশ্য। এক কথায় ৯০-এর দর্শকের বাংলা ছবির কান্ডারি যে সমস্ত পরিচালকরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্বপন সাহা। তবে কেবল সেই সময় নয়, বর্তমান প্রজন্মের কাছেও তাঁর কাজ এবং তিনি দারুণ ভাবে জনপ্রিয়। আর এবার তাঁকেই জানানো হল বিশেষ সম্মান।
আরও পড়ুন: ‘ওর মতো কেউ পারে না…’! আলাদা হয়েও কেন ফের সোহেলের কাছে, জবাব ‘ডিভোর্সি’ তিয়াসার
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল-এর তৃতীয় বার্ষিক উৎসব যা চলে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সেখানেই শতাধিক সফল বাংলা ছবির পরিচালক স্বপন সাহাকে 'লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট' সম্মানে ভূষিত করা হয়।
পরিচালকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তাঁর বহু ছবির নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। পুরস্কার দেওয়ার সময় খুবই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন ঋতুপর্ণা। স্বপন সাহার প্রতি তিনি যে কতখানি কৃতজ্ঞতা তা নিয়ে অকপটে নানা কথা ভাগও করে নেন তিনি। অভিনেত্রী বললেন, 'আমার হাত দিয়ে ওঁকে এই সম্মান তুলে দেওয়া আমার জীবনের এক বিশাল প্রাপ্তি। সত্যি বলতে, আমার কেরিয়ারে যাঁর অনেক বড় অবদান রয়েছে। আমার অভিনীত অনেক সুপারহিট ছবি স্বপনদার হাতে তৈরি। উনিই তো আমাকে 'মাস অডিয়েন্স'-এর সঙ্গে পরিচয় করিয়েছেন।'
এই অনুষ্ঠানে এসে স্বপন সাহা বাংলা ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও তাঁর মত ভাগ করে নেন। পরিচালক বললেন, ‘বর্তমানে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বেশ পিছিয়ে পড়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আগে বছরে যে পরিমাণ ছবি তৈরি হত, এখানে এখন তা হচ্ছে না।’
পাশাপাশি তিনি বহু সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গেও নানা কথা ভাগ করে নেন। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গল মুভি হাউজগুলো এখন যথেষ্ট সংকটে রয়েছে। বাংলা সিনেমা পিছিয়ে যাওয়ার এটাও বড় কারণ। মনে রাখতে হবে, ওই সব সিঙ্গল হাউজ থেকেই আমরা সিনেমার ব্যবসা পেয়েছি। তখন তো আর মাল্টিপ্লেক্স ছিল না। সিনেমা হলগুলো সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সিঙ্গল স্ক্রিন আর নেই ন বললেই চলে। সত্যিই সিনেমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে।’
তবে কেবল ঋতুপর্ণা নন, এদিনের অনুষ্ঠানে বিনোদন জগতের আরও অনেক তারকা উপস্থিত ছিলেন। মূল অতিথি উপস্থিত ছিলেন মুম্বইয়ের অভিনেতা রোহিত রায়। তিনিও বেশ কয়েকটি বাংলা ছবিতে কাজ করেছেন। এছাড়াও ছিলেন অন্বেষা দত্তগুপ্ত, দেবলীনা দত্ত, রামকমল মুখোপাধ্যায়, সংঘমিত্রা চৌধুরী, সৌমজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, হৈমন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাঞ্চন বন্দ্যোপাধ্যায়।