সীতারাম ইয়াচুরির শেষ যাত্রার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সাদা বাক্সে বন্দি এই বাম নেতার দেহ। আর বাক্সের উপর সাজানো সাদা ফুল। এটা দেখেই, নেটিজেনদের একাংশ প্রশ্ন তুলতে থাকেন, ‘ব্রাহ্মণ পরিবারের জন্মানো সীতারাম ইয়েচুরি কি তাহলে, খ্রিস্টান হিসেবে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন?’
তবে শুধু প্রশ্ন তুলেই ক্ষান্ত হয়নি বিরোধীরা। দাবি করা হতে থাকে, খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার কারণেই নাকি তিনি ছিলেন এত হিন্দুবিদ্বেষী। সেরকমই কিছু পোস্ট শেয়ার করে টুইট করলেন এবার অভিনেত্রী স্বরা ভাস্কর।
আরও পড়ুন: মমতার সামনে হাত জোড় করে জুনিয়র ডাক্তাররা! সোশ্যালে সরব স্বস্তিকা-সুদীপ্তারা
স্বরা এক্স হ্য়ান্ডেলে লিখলেন, ‘সংঘি (পড়ুন বিজেপি সমর্থক)দের অজ্ঞতা আমাকে বিষ্মিত করে এভাবেই। পুরোটা পড়বেন-
১. খ্রিস্টান হওয়ার মধ্যে কোনো অপরাধ নেই, যদি আধ্যাত্মিকভাবে এই ধর্মের প্রতি আপনার ঝোঁক তৈরি হয়।
২. আমার মনে সন্দেহ আছে যে, কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তার দেহ একটি বাক্সে রয়েছে কারণ, এটি চিকিৎসা সংক্রাণ্ত গবেষণার জন্য এইমসকে দান করা হয়েছে! এটি সর্বজনীনভাবে উপলব্ধ তথ্য।
তিনি সত্যিই নিঃস্বার্থ মানুষ ছিলেন মৃত্যুর পরেও মানবতার উন্নতির জন্য ছিলেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ! এদিকে, একজন কমিউনিস্ট নেতার মৃত্যুকে সাম্প্রদায়িক করে তোলে যারা, তারা মানুষ বলার যোগ্যতা রাখে না!!’
আরও পড়ুন: ‘পবিত্র আত্মার শান্তি কামনা করি ডোনা’, লেখা সৌরভ-পত্নীর ফেসবুকে! পরে জানা গেল…
১২ সেপ্টেম্বর প্রয়াত হন সিপিএম নেতা। মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ ভর্তি ছিলেন শ্বাসযন্ত্রে গুরুতর সংক্রমণ ধরা পড়ার পর থেকে। দীর্ঘ ২৫ দিনের যুদ্ধ শেষে প্রয়াত হন তিনি।
১৯৫২ সালের ১২ অগস্ট ইয়েচুরির জন্ম মাদ্রাজে (অধুনা চেন্নাই)র এক ব্রাহ্ম পরিবারে। স্নোতোকত্তর পড়াশোনা করার সময়, জেএনইউয়ে থাকাকালীনই ইয়েচুরির বামপন্থী ছাত্র রাজনীতিতে যোগ। তাঁর ধর্ম পরিবর্তনের কোনো খবর, আনুষ্ঠানিকভাবে কোথাও নেই। তিনি নিজেও এরকম কোনো বক্তব্য পেশ করেননি কখনো। মৃত্যুর পর, দিল্লি এমসের অ্যানাটমি বিভাগে সীতারামের দেহ তুলে দিয়েছিলেন তাঁর পরিবার। ছিলেন সেখানে পলিটব্যুরোর সদস্যরাও।
দেহদান করার আগে, সীতারামের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকেই নিয়ে যাওয়া হয় বসন্তকুঞ্জে তাঁর বাসভবনে। তারপর সবশেষে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এইমসে।