মনের কথা মন খুলে বলতে ভয় পান না স্বস্তিকা। ‘কুছ তো লোগ কহেঙ্গে, লোগোগা কাম হ্যায় কহনা’, এই মন্ত্রা নিয়েই বাঁচেন স্বস্তিকা। অকপট,সাহসী-জীবনটা নিজের শর্তেই বাঁচতে ভালোবাসেন স্বস্তিকা। সাহসী ব্যক্তিত্বের জন্য ট্রোলারদের নিশানায় পড়েন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তবে সপাট জবাব দিতে তাঁর জুরি মেলা ভার।
বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুক স্টেটাসে স্বস্তিকা লিখলেন, ‘বলুন দুদু্ ,ডুডু নয়…নোংরামো করতে গেলেও একটু শিক্ষা লাগে কাকু’। সেই নিয়ে হইচই সোশ্যাল মিডিয়ায়। মূহূর্তে ভাইরাল স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সেই পোস্ট। কার উদ্দেশে এই বার্তা নায়িকার?
তবে ব্যাপারটা একটু খোলসা করা যাক। এদিনই মুক্তি পেয়েছে স্বস্তিকা অভিনীত ছবি ‘শ্রীমতী’র নতুন গান ‘36-24-36’ (থারটি সিক্স-টোয়েন্টি ফোর-থারটি সিক্স)। সেই গান নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করে স্বস্তিকা লিখেছিলেন, ‘ফিগার ঠিক রাখার সমস্ত কঠিন থেকে কঠিনতম উপায় এই গানে উপস্থিত! সকল শ্রীমতিদের জন্য ডেডিকেট করলাম...’।
বরের অ্যাটেনশন ফিরে পেতে নিজেকে সুন্দর করে তুলতে আগ্রহী 'শ্রীমতী' স্বস্তিকা কত কসরত করছে তাই মজার ছলে ফুটে উঠেছে এই গানে। তবে সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সেই এক নেটিজেন লাগাতার কুরুচিকর মন্তব্য করতে থাকেন। অভিনেত্রী স্তন নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য করেন। এর পালটা জবাব দেন অভিনেত্রী। সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সে অভিনেত্রী লেখেন, ‘একটা মজার গান, তার কমেন্ট সেকশনে একটি অসভ্য লোক নোংরামি করেই চলেছে এবং তার প্রোফাইল লক করা। অনেক কথায় দেখছি বারবার লিখছে ‘ ডুডু’। আমি যতদূর জানি মেয়েদের বুক কে ইয়ারকি মেরে ‘দুদু’ বলা হয়, এসেছে ‘দুধ’ থেকে, কারন শিশুদের জন্য আমাদের বুকের দুধের চেয়ে বেশী পুষ্টিকর খাদ্য এখনও কোনও বিজ্ঞানী বের করতে পারেনি।’
মেয়েদের সবসময় 'অবজেকটিফাই' করার বিরোধ জানিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘মেয়েদের বুক একটি সেক্সুয়াল অবজেক্ট, সবাই জানে। এই নিয়ে আলাদা চর্চার দরকার নেই, কিন্তু তাই বলে সবসময় কেবল অবজেক্টিফাই হয়েই যাব?আর নোংরামি করতে গেলেও একটু শিক্ষা লাগে। দুদু কে ডুডু বললে হয়না কাকু।’
মূহূর্তে ভাইরাল স্বস্তিকার এই মন্তব্য। ছবির পরিচালক অর্জুন দত্তও এই মানসিকতার তীব্র নিন্দা করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলিং নিয়ে মাস কয়েক আগে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘আজ শুধু আমি কেন ,যে কোনও মেয়ে যদি পুরুষের মতো মদের দোকানে যায় ,শর্টস পরে, সিগারেট খায় সাথে সাথে প্রশ্ন উঠবে। কিন্তু চুপ করে থাকার তো কোনো মানে নেই, প্রতিবাদ করতে হবে। না করলে সোশ্যাল মিডিয়াতে থাকারও মানে নেই। আজ আমি যদি এক মাথা সিঁদুর পরে থাকি তখন আমায় একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে শুনতে হবে ব্যাক ডেটেড , আবার না পড়লে শুনতে হবে আমি সংস্কার মানি না। তখন কেন শাঁখা সিঁদুর পড়া উচিৎ, ভারতীয় নারীর ইতিহাস ভূগোল একেবারে পিন্ডি চটকে মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। কাজেই সমস্যা দুদিকেই। এখন আমি চিৎকার করছি ,আজ থেকে একশো বছর পরে অন্য কেউ করবেন,ব্যাপারটা চলতেই থাকবে বলে আমার মনে হয়’।