আর জি কর কাণ্ডে প্রথম থেকেই সরব অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। পথে মিছিল,জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চ, দীর্ঘ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন স্বস্তিকা। বরাবরই স্পষ্টবক্তা সন্তু মুখোপাধ্যায় কন্যা। রাখঢাক পছন্দ নয় তাঁর। বুধবার প্রেসিডেন্সি কলেজের ডাকা রাজ্য ও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন স্বস্তিকা। আরও পড়ুন-'সারাক্ষণ মহিলাদের বুক,পেট,পাছা নিয়ে মন্তব্য করে যায়…', কুণাল-সৌগতদের ধুয়ে দিলেন স্বস্তিকা
সেখানেও বরাবরের মতো আনকাট তিনি। স্বস্তিকা মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘একটা মহিলাকে গালাগাল দিতে হলে বেশ্যা কথাটা সর্বশ্রেষ্ঠ গালাগাল। আমারা, মহিলারা যারা সিনেমা জগতের সঙ্গে যুক্ত, তাদের তো বলাই হয় যে বেশ্যাবৃত্তি করে তারা কেরিয়ারে এগোয়। আমার ২৪ বছরের কেরিয়ারে আমি বেশ্যা, এই কথাটা এতবার শুনেছি যে এখন আর গায়ে লাগে না। আমার মতো হয়ত অনেকেই শুনেছেন..এটা এখন গা সওয়া হয়ে গেছে’।
এরপর অভিনেত্রী বলেন, গত এক-দু বছরে মেয়েদের টার্গেট করে নতুন ধরণের কটাক্ষ মার্কেটে এসেছে। স্বস্তিকা জানান,নিময়িত স্লাট শেমিং-এর মুখে পড়েন তিনি। ‘এই সব কথা যখন আর গায়ে লাগছে না, লোকজন দেখি আমাদের আন্টি, কাকিমা, মাসিমা এইগুলোকে গালাগাল বলে ধরে নিচ্ছে। আমি জানি না, সম্পর্কের এই ডাকগুলো কীভাবে গালাগালে রূপান্তরিত হয়েছে জানি। কিন্তু দিদি শব্দটা এখনও কেউ গালাগাল হিসাবে দিচ্ছে না। আমি রোজদিন সকালবেলা উঠে এত গালাগাল শুনি, কিন্তু দিদি বলে কেউ গাল দিচ্ছে না…. সেটা কোন দিন গালাগালি হয়ে উঠবে জানি না’।
স্বস্তিকা মনে করান, মেয়েরা কখনও শরীর সর্বস্ব প্রপ নয়। এরপর সোজা কুণাল ঘোষ ও দেবাংশু ভট্টাচার্যকে তোপ দাগেন স্বস্তিকা। অভিনেত্রী মৌসুমী ভট্টাচার্যকে বডি শেমিং করার ঘটনা স্বস্তিকা বলে উঠেন, ‘এঁরা নাকি সরকারের মুখপাত্র, কিন্তু এরা মুখ দিয়েই বাতক্রিয়া কর্ম করে।….বদন বিগড়েছে এই কথা বলা হবে কেন?’
এরপর স্বস্তিকার আক্ষেপ, তাঁকে কখনও সিপিএম আবার কখনও টিএমসি-র সমর্থক বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। বিজেপির নাম মুখেও আনতে চাইলেন না অভিনেত্রী। আক্ষেপের সুরে বলেন, হালে তাঁকে ‘নকশাল’ বলেও দেগে দেন অনেকে। তিনি জানান, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে ‘আজাদি স্লোগান’ দেওয়াতেই নাকি এমন কথা শুনতে হয়েছে। পালটা প্রশ্ন, ‘আচ্ছা ওই স্লোগানগুলো কি কারুর বাপের সম্পত্তি? জেএনইউ-তে বলা হয়েছিল বলে আর বলা যাবে না!'
স্বস্তিকার এই আগুন ঝরানো বক্তব্যে শুধু কুণাল, দেবাংশুরা নন ছাড় পেলেন না মমতাও। ‘এক মাস হয়ে গেছে উৎসবে ফিরুন’, মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য টেনে তিনি বলেন,'একমাস হয়ে গেছে এই লজিকে গেলে তো আমাদের স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস সেলিব্রেট করা উচিত নয়, ২১ জুলাই উদযাপন করা উচিত নয় কারণ এগুলো অনেকদিন আগে হয়ে গেছে…'।