আরজি কর কাণ্ড নিয়ে শুরু থেকেই সরব হয়েছেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। প্রায়দিনই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ মিছেলে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে স্বস্তিকাকে। রবিবার রাতের মহামছিল এবং মঙ্গলবার রাতেও শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে প্রতিবাদে সামিল হতে দেখা গিয়েছে স্বস্তিকাকে।
অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অবশ্য বরাবরই ঠোঁটকাটা। চিরকালই ভুল বা অন্যায় দেখলে সোজা-সাপটা কথা বলতে তিনি দ্বিধা করেন না। আরজি করের ঘটনার পর, মঙ্গলবার পাঁচমাথার মোড় থেকে সরাসরি এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন স্বস্তিকা।
মঙ্গলবার সাংবাদিকের সামনে স্বস্তিকা বলেন, ‘এই সভ্য সমাজে সারাক্ষণ মেয়েদের বুক আগলে হাঁটতে হবে কেন? যদি দেখি পাঁচজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে, কিংবা একটা ভিড়ের মধ্যে দিয়ে যেতে গেলে আমরা প্রথমেই কিন্তু এরকম (দুহাত ক্রস করে কাঁধে হাত দিয়ে) করে নিই। বাসে উঠি, ট্রামে উঠি, কলকাতা, কলকাতার বাইরেও আমি কাজ করি, সব জায়গায় তো আমার লোকবল নেই। কলকাতা, বোম্বে, এটা যেকোনো জায়গায়, আমেরিকে, ইউকে নিয়ে কথা না, এটা আমাদের মধ্যে ঢুকে গেছে যে, একটা ভিড় দেখলেই আমরা এরকম (ফের হাত ক্রস করে বুক ঢেকে) করি। আমরা জানি, যেকোনও মুহূর্তে কেউ এসে আমাদের বুকে নোংরাভাবে হাত দেবে। এটা আমাদের মারাও আমাদের শেখায়, আমরাও আমাদের বাচ্চাদের শেখাই। স্বস্তিকার প্রশ্ন এখানে যতজন মেয়েরা আছো, তাঁরা কথাটা কি মানবে না? যে আমরা প্রথমেই এইরকম করে নি। ’
এদিকে এই স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের প্রতিবাদী চরিত্র নিয়ে অনেকে যেমন তাঁর প্রশংসায় ভরিয়েছেন। ঠিক তেমনই কিছু নীতিপুলিশ নেটিজেন আবার সামান্য বিষয় নিয়েও তাঁকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি।
৩ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার, অভিনেত্রী শোভাবাজার চত্বরের এক জমায়েতে গিয়ে লেখিকা তথা রূপান্তরকামী মহিলা অ্যাক্টিভিস্ট বন্যা কর সহ অন্যান্যদের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তুলতে দেখা যায়। সেই ছবি নিয়েও ট্রোল করতে শুরু করেন কিছু লোকজন। তবে তা নিয়ে ট্রোলারদের জবাব দিতে ছাড়েননি স্বস্তিকা। সাফ বলেন, 'আমি সন্দীপ ঘোষ নই। আমি রেপ করিনি। আমি খুন ও করিনি। রাস্তায় নেমে ১৫ ঘণ্টা ধরে প্রতিবাদ রত মহিলা বা পুরুষদের সারাক্ষণ মুখ গম্ভীর করে থাকতে হবে সেই নিয়মটা কে বানাল? আর কোন নিয়ম মানব না। যেভাবে মনে হবে সেই ভাবে রাস্তায় নামব, দিনে, রাতে।'