বিনোদুনিয়ার জন্য ২০২০-একাট অভিশপ্ত বছর, সেই ধারা বছরের শেষ মাসেও অব্যাহত থাকল। চলতি বছরের এন্টারটেনমেন্ট দুনিয়ার একের পর এক তারকাকে হারিয়েছেন দর্শক ও ইন্ডাস্ট্রি। কেউ দীর্ঘ রোগভোগের পর চলে গিয়েছেন, কেউ আবার আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন। এই তালিকাটা বেশ লম্বা, এবার সেই দুর্ভাগ্যজনক তালিকায় যোগ হল আরও একটা নাম। টেলিভিশনের সাড়া জাগানো ধারাবাহিক ‘তারক মেহতা কা উলটা চশমা’ টিমের অন্যতম সদস্য, সিরিয়ালের লেখক অভিষেক মাকওয়ানা আত্মঘাতী হয়েছেন গত সপ্তাহে।
আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়েই নাকি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন এই লেখক, দাবি পুলিশের। তবে অভিষেকের পরিবারের অভিযোগ ব্ল্যাকমেলিং এবং সাইবার ফ্রডের শিকার হয়ে এই চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে ছেলে। পরিবারের তরফে দাবি করা হচ্ছে অভিষেকের মৃত্যুর পরেও প্রতারকরা তাঁদের ফোন করে টাকা দাবি করছে কারণ লোনের টাকা নেওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের গ্র্যারেন্টার হিসাবে নাম উল্লেখ করেছিলেন অভিষেক।
মুম্বই মিররে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, গত ২৭ নভেম্বর কান্দিভালির অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় অভিষেকের ঝুলন্ত দেহ। এরপর চারকোপ থানার পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে। অভিষেকের ভাই জেনিস দাবি করেছেন, দাদার মৃত্যুর পর সে ই-মেল দেখেছে, সেখানেই স্পষ্টই ধরা পড়েছে কীভাবে আর্থিক প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়েছিল অভিষেক। তিনি বলেন- ‘আমি ই-মেলে দেখলাম শুরুতে দাদা অল্প পরিমাণ টাকা লোন হিসাবে নিয়েছিল একটি ইজি লোন অ্যাপ থেকে, যার সুদের পরিমাণ ভীষণরকম চড়া। এরপর দাদা আর কোনও লোনের আবেদন না জানানো সত্ত্বেও ওদের তরফে একের পর টাকা ছোট ছোট কিস্তিতে দাদার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। ওদের সুদের পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ চড়া!’
পুলিশ জানিয়েছে ঘর থেকে গুজরাতিতে লেখা সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যা ও আর্থিক সমস্যার কথা সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে পরিবারের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন অভিষেক। পুলিশের কথায়, অভিষেক লিখেছেন তিনি শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন তবে বর্তমানে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছে।
অভিষেকের পরিবারের তরফে তোলা প্রতারণার দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অভিষেকের ব্যাঙ্কের তথ্য ও কল ডাটা রেকর্ড চেয়ে পাঠিয়েছে মুম্বই পুলিশ। এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার মামলায় পরিবারের তরফে আনা অভিযোগের কোনও জোরালো প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।