কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, লাখো পুরুষের হৃদয়ে দোলা লাগিয়েছিলেন এক বাঙালি কন্যে। ‘আশিক বানায়া আপনে’ ছবিতে ইমরান হাশমির বিপরীতে বঙ্গতনয়া তনুশ্রী দত্তকে দেখে অনেকেই বলেছিলেন পরবর্তী ‘বিপাশা বসু’। একের পর এক ফ্লপে জর্জরিত তনুশ্রী হঠাৎ করেই শোবিজ থেকে গায়েব হয়ে যান।
২০১৮-য় যখন সমাজমাধ্যম উত্তাল হয়েছিল ‘মিটু’ আন্দোলন নিয়ে। সেই সময় নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ আনেন। তনুশ্রীর অভিযোগ নিয়ে এতদিনে মুখ খুলেছেন নানা। তনুশ্রীর অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। সেই নিয়েই ফুঁসে উঠলেন তনুশ্রী।
নানা পাটেকর 'প্যাথলজিক্যাল মিথ্যাবাদী'
২০০৮ সালে হর্ন ওকে ছবির সেটে নানার হাতে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন তিনি, এমনই অভিযোগ ছিল তনুশ্রীর। ঘটনা সম্পর্কে নানার ‘তাচ্ছিল্য ভরা’ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স ২০০৪। তনুশ্রী বলেন , ‘এখন তিনি ভয় পেয়েছেন এবং বলিউডে তাঁর সমর্থকের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। যাঁরা তাঁকে সমর্থন করেছেন, তাঁরা হয় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন, নয়তো তাঁকে কোণঠাসা করে ফেলেছেন। লোকেরা এখন তার কারসাজি বুঝে গেছে। ছয় বছরের পুরনো অভিযোগের জবাব! নানা পাটেকর একজন প্যাথলজিক্যাল মিথ্যাবাদী (ধারাবাহিকভাবে জেনেশুনে মিথ্যা বলেন এমন ব্যক্তি)।’
দ্য লালানটপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নানাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তনুশ্রীর অভিযোগ নিয়ে তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন কি না। জবাবে ট্যাক্সি ৯২১১ অভিনেতা বলেন, তিনি প্রথম থেকেই জানতেন যে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, যে কারণে তিনি কখনও রাগ করেননি।
নানার জবাব
নানা বললেন, ‘আমি জানতাম পুরোটাই মিথ্যে। তাই রাগ করিনি। সবই যখন মিথ্যা, তখন আমি রাগ করব কেন? আর এ সবই জিনিসই পুরনো। এর আগেও হয়েছে। এই নিয়ে কী আর কথা বলব। সেই সময় আমি কী বলতে পারি যখন এরকম কিছু ঘটেনি? হঠাৎ কেউ বলছে তুমি এটা করেছ, তুমি ওটা করেছ। এত কিছুর কি জবাব দিতাম? আমার কি বলা উচিত ছিল, যে আমি এটা করিনি? আমি সত্যিটা জানি যে, আমি কিছুই করিনি।’
তনুশ্রী দত্তের মি টু কাহিনী
তনুশ্রী ২০০৮ সালে হর্ন ওকে প্লিজ (২০০৮) ছবির সেটে নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। নানা পাটকর সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। শুধু বিনোদন জগতই নয়, মহারাষ্ট্রের কয়েকটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী নানাকে সমর্থন করেছিল, পালটা রোষের মুখে পড়েন তনুশ্রী। ছবি থেকেও বাদ পড়েন অভিনেত্রী।
তনুশ্রী দত্তের অভিনয় জীবন
২০০৪ সালের মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা জিতেছিলেন। একই বছর তিনি ইকুয়েডরে অনুষ্ঠিত মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে সেরা দশে স্থান পেয়েছিলেন। আদিত্য দত্তের আশিক বানায়া আপনে ছবির হাত ধরে অভিনয়ের জগতে পা দেন। তার অভিনীত সর্বশেষ হিন্দি চলচ্চিত্র ছিল অ্যাপার্টমেন্ট (২০১০)।
বলিউড থেকে বিদায় নিয়ে, তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করেন তনুশ্রী। আর তা শেষ হলে মার্কিন মুলুকে চাকরি করছিলেন। ২০১৮ সালেই ইউএসের গ্রিন কার্ড পেয়েছেন তনুশ্রী দত্ত। তবে বেশিদিন মন টেকেনি সেখানে। ফিরে আসেন ভারতে। ওজন ঝরিয়ে ফের শোবিজ জগতে কামব্যাকের প্রচেষ্টায় অভিনেত্রী।