দীপাবলির আনন্দে মাতোয়ারা গোটা দেশ। আর আলোর উৎসবের আগেই কেশসজ্জা শিল্পী তনুশ্রী দাসের জীবনে নতুন আলো। গত মাসেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিলেন টলিপাড়ার এই টেকনিশিয়ান। আরজি কর আবহের মাসেই কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার শিকার হওয়ার অভিযোগ এনে আত্মহত্য়ার চেষ্টা করেছিলেন তনুশ্রী দাস।
জানিয়েছিলেন, প্রতিবাদ করায় তিন মাস সাসপেন্ড করা হয়েছিল তাঁকে। নির্দিষ্ট সময় পর কাজে ফিরলেও হেয়ার ড্রেসার গিল্ড এবং ফেডারেশন একযোগে কাজ কেড়ে নেয় তাঁর থেকে। অবশেষে দেনার দায়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন তনুশ্রী। সেই সময় তনুশ্রীর সমর্থনে আওয়াজ তুলেছিলেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। জানিয়েছিলেন, শেষ দেখে ছাড়ব। তনুশ্রী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কাজে ফিরলেন, তাও সুদীপ্তার হাত ধরেই।
শীঘ্রই সান বাংলায় নতুন রিয়ালিটি শো ‘লাখ টাকার লক্ষ্মীলাভ’ নিয়ে ফিরছেন সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সোমবার থেকে সেই রিয়ালিটি শো-এর মঞ্চেই ফিরলেন তনুশ্রী। এতদিন পর লম্বা বাধা পেরিয়ে শ্যুটিং ফ্লোরে ফিরে আশ্বস্ত তনুশ্রী। ঝড়-ঝাপটা সামলে পেয়েছেন নতুন জীবন। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘১৭ বছর ধরে কালী মায়ের পুজো করছি। সবটাই মায়ের কৃপা।’ তনুশ্রী জানিয়েছেন, সুদীপ্তাকে সাজানোর দায়িত্ব ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র স্টাইলিস্ট হেমা মুন্সীর উপর। বাকিদের সাজাবেন তনুশ্রী।
কাজে ফিরে আত্মবিশ্বাসী তনুশ্রী। বলেছেন কারুর সামনেই আর হাত পেতে কাজ চাইবেন না, নিজে যে কাজ জোগাড় করতে পারবেন, সেটাই করবেন। এতদিন ধরে কাজ শিখেছেন, অন্ন ঠিক জোগাড় হয়ে যাবে।
তনুশ্রীর ফেরার খবর জানিয়ে সুদীপ্তা লেখেন, ‘শ্যুটিং শুরু… তনু ফের কাজে ফিরল, দারুণ খুশি। যারা আমার থেকে তনুর (তনুশ্রী দাস, কেশসজ্জা শিল্পী) সম্পর্কে, ওর স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে চাইছিলেন, এটা তাঁদের জন্য। ওহ একদম ঠিক আছে। কাজে ফিরেছে’।
আত্মহত্যার চেষ্টা করার সময় অডিও বার্তা এবং সুইসাইড নোটে রীতিমতো বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন তনুশ্রী। খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটেছিলেন সুদীপ্তা, সৃজিত, চৈতিরা। তখনই সুদীপ্তা রুখে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘এই অন্যায় মানতে পারছি না, শেষ দেখেই ছাড়ব’। পরে থানায় গিল্ডের ১১ সদস্যের নামে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগও দায়ের হয়। সেই মামলা আদালতে বিচারাধীন।
তনুশ্রীর কথায়, নির্বাচনের মাধ্যমে সম্পাদক হতে চেয়েছিলেন বলেই তাঁকে তিন মাস সাসপেন্ড করা হয়। কাজ না থাকায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। নির্দিষ্ট সময় শেষে কাজে ফিরতে চাইলেও থ্রেট কালচারের শিকার হন তিনি। মেয়ের কলেজের ফিস, সংসার খরচ টানতে না পেরে চরম সিদ্ধান্ত নেন। বললেন, ‘কাজের মানুষের থেকে কাজ কেড়ে নেওয়া— কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট’।
কাজে ফিরলেও এখনও চিকিৎসা চলছে তাঁর। নিয়মিত ওষুধ, কাউন্সিলিং। চিকিৎসা শেষ হলে, মিলবে শংসাপত্র। এখন আর কারুর বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়, বরং অনুযোগ রয়েছে তাঁর। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, 'বিচার চেয়ে স্বরূপ বিশ্বাসকে চিঠি দিয়েছিলাম। তিনি দেখলেনই না! খারাপ লেগেছে।'