গত মাসের ১৪ তারিখ কিডনির সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। এরপর দুটি ফুসফুসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। মাঝে একটু সুস্থ হয়েছিলেন তবে আচমকাই শনিবার রাত থেকে বিগড়ে যায় স্বাস্থ্য। ছিলেন ভেন্টিলেশন সাপোর্টে। সোমবার বেলা ১১.১৭ মিনিটে ‘ভালোবাসার বাড়ি’ ছেড়ে চলে গেলেন তরুণ মজুমদার। শেষ হল সব তাঁর ‘চাওয়া-পাওয়া’।
রসায়নের ছাত্র ছিলেন তবে ছবির প্রতি আকর্ষণ ছিল ছোট থেকেই। পূর্ববঙ্গের এক মফস্সল শহরের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান চেনা ছকের বাইরে হেঁটে সিনেমাওয়ালা হতে চেয়েছিলেন। সাফল্যও পেয়েছেন। ১৯৫৯ সালে শচীন এবং দিলীপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করলেন ‘যাত্রিক’। এই ত্রয়ীর প্রথম ছবি ‘চাওয়া পাওয়া’। তিন নম্বর ছবিতে ‘কাঁচের স্বর্গ’তেই ছক ভেঙেছেন। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তরুণ মজুমদার।
১৯৫৯ সালে ছবির জগতে পা রাখা মানুষটি কাজ করেছেন শেষজীবন পর্যন্ত। ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘ভালোবাসার বাড়ি’। কদিন আগেও নতুন তথ্যচিত্রের রেকির কাজ সেরেছিলেন। ছবির ভাবনা কোনওদিন তাঁকে ছেড়ে যায়নি। জীবনে অজস্র পুরস্কার পেয়েছেন। ভারত সরকার তাঁকে 'পদ্মশ্রী' সম্মান দিয়েছে। অসংখ্য বার এসেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। কিন্তু তরুণ মজুমদারের সেরা পুরস্কার অগুণতি বাঙালির অফুরন্ত ভালোবাসা। তবে লাইমলাইট থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন তিনি।
'শেষযাত্রায় অসংখ্য মানুষের ঢল চাই না', পরিবারকে বলে গেছেন তরুণ মজুমদার। কোনও বিরাট আয়োজনে নয়, নিঃশব্দেই ‘ভালোবাসার বাড়ি’ ছাড়তে চাওয়ার আবেদন রেখে গেছেন তরুণ মজুমদার, এমনটাই জানিয়েছেন পরিচালকের দীর্ঘদিনের বন্ধু কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
তাঁর শেষকৃত্য নিয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য মেলেনি পরিবারের তরফে। রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই তরুণ মজুমদারে শেষসফরের যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হবে।