মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া শেষ। সোমবার সকালে জীবনের মঞ্চ থেকে চিরবিদায় নিলেন তরুণ মজুমদার। বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের মহীরূহ তরুণ মজুমদার।
‘পলাতক’, 'সংসার সীমান্তে'-র মতো অন্যধারার ছবি করেছেন তরুণ মজুমদার, আবার ‘দাদার কীর্তি’, ‘ফুলেশ্বরী’র মতো কমার্শিয়াল হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন তরুণ মজুমদার। বাংলা ছবির ক্ষেত্রে ‘ভার্সেটাইলিটি’র আদর্শ উদাহরণ তরুণ মজুমদার।
গত ১৪ই জুন থেকে এসএসকেএম-এ ভর্তি ছিলেন তরুণ মজুমদার। শুরুর এক সপ্তাহ কাকপক্ষীও টের পায়নি সেই খবর। তাঁর চিকিৎসার জন্য সবরকম ততপরতা গ্রহণ করেছিল রাজ্য সরকার। তবে শেষরক্ষা হয়নি। এদিন তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ইন্দ্রনীল সেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, রাজ্য সরকারের তরফে কোনওরকম শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে না তরুণবাবুকে। কারণ এটা ওঁনার শেষ ইচ্ছা। অরূপ বিশ্বাস জানান, ‘উনি নিভৃতে, নীরবে চলে যেতে চেয়েছে। তাই সাদামাটাভাবেই সহবে শেষকৃত্য’। রাজ্যের তরফে সবরকম প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল পরিবারকে। তবে তাঁরা তরুণবাবুর অন্তিম ইচ্ছার কথা জানিয়ে দেয়।
বর্ষীয়ান পরিচালকের দেহদান করা হবে এসএসকেএম-এর অ্যানাটোমি বিভাগে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে আসুক তাঁর দেহ, চেয়েছিলেন তরুণ মজুমদার। জানান মন্ত্রী। হাসপাতাল থেকে এনটিওয়ান স্টুডিও বা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে তরুণ মজুমদারের দেহ- তারপর ফের এসএসকেএম-এ ফিরিয়ে আনা হবে।
জানা গিয়েছে, প্রয়াত চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদারের চোখ থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করা হয়েছে। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁর পার্থিবদেহ বের করা হবে এসএসকেএম থেকে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে এনটি ওয়ান স্টুডিওতে। সেখানে আধ ঘণ্টা মরদেহ শায়িত থাকবে, তবে শ্রদ্ধা জানাতে এলে যেন ফুলমালা না নিয়ে আসা হয়। জানিয়েছে পরিবার। বিকাল সাড়ে চারটা পাঁচটা নাগাদ মরদেহ আবার নিয়ে আসা হবে এসএসকেএম এর অ্যানাটমি বিভাগে মরণোত্তর দেহদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য।
পরিবারসূত্রে খবর, দেহদানের লিখিতভাবে অঙ্গীকার করে যাননি তরুণ মজুমদার। তবে মরণোত্তর দেহদানের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা গণদর্পনের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা হয়েছিল। তরুণ মজুমদারের দেহদানের সম্মতি দিয়েছে পরিবার।