২২ জুলাই শেষ হয়েছে তাঁর ভারতে থাকার মেয়াদ। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই প্রায় ৩ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে তসলিমা নাসরিনের ভারতে থাকার রেসিডেন্স পারমিট। তাই পুরো বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তসলিমা। ইতিমধ্যেই ফোনে ও মেলে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করেছেন ভারতের নির্বাসিত লেখিকা। তবে উত্তর মেলেনি।
পুরো বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তসলিমা লেখেন, 'আমি ২০ বছর ভারতে রয়েছি। এমনটা কখনও হয়নি। প্রত্যেকবার পারমিটের মেয়াদ ফুরনোর সঙ্গেই পুনর্নবীকরণ করা হয়। কিন্তু এবারে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না।'
তসলিমা সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও লেখেন, 'সরকারের কেউই আমার চেনা নয়। আমি কারও সঙ্গে যে যোগাযোগ করবো জানার জন্য যে কেন আমার রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে না, তারও উপায় নেই। গুগল থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইমেইল ঠিকানা নিয়ে ইমেইল করেছি, তার কোনও উত্তর পাইনি।' তিনি লেখেন, 'যে দেশে জন্মেছিলাম, কিছু সত্য উচ্চারণ করেছি বলে সে দেশ নির্বাসন দিল, যে রাজ্যে ভাষার টানে আর প্রাণের টানে বাস করছিলাম, সে রাজ্যও অজ্ঞাত কারণে নির্বাসন দিল। আর যে শহরে বাস করছি এখন, অন্য কোনও দেশে বাস করার কোনও উপায় নেই বলে, সে শহরও কি অবশেষে তল্পিতল্পা গুটোতে বলবে?'
উদ্বিগ্ন তসলিমার কথায়, ‘এই বয়সে এই স্বাস্থ্য নিয়ে আমার আর কোথাও যাওয়ার মতো অবস্থা নেই। নিজের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলার মধ্যে থাকতে ভালবাসি বলে কলকাতায় ছিলাম। সেখান থেকেও চলে আসতে হল দিল্লিতে। এ বার আমি কোথায় যাব?’
প্রসঙ্গত ১৯৪৪ সালে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর বেশ কয়েকবছর ইউরোপে বসবাস করেছিলেন তসলিমা। এরপর ২০০৪ সালে তিনি এদেশে চলে আসেন।ভারতেও বেশ কয়েকবার অবস্থার বদলের পর তিনি ২০১১ সাল থেকে দিল্লিতে বসবাস করছেন। তবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই কি তাঁর পারমিট রিনিউ করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে? এবিষয়ে তসলিমা জানান, বাংলাদেশ কিংবা সেখানকার রাজনীতির সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি একজন সুইডিশ নাগরিক হিসাবে ভারতে থাকেন। আর বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির অনেক আগে তাঁর পারমিট বাতিল করা হয়েছে। ২০১৭ সালে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণ দেখিয়ে তাঁর পারমিট বাতিল করা হয়েছে।
তাঁর কথায়, ‘মানুষ ভাবে সরকার রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। তেমনটা কিন্তু এক্কেবারেই নয়। আমি পারমিট না পেলে মরে যাব। আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই।’