আরজি কর-কাণ্ডের পর বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কম পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়াতে। পড়শি দেশ নিয়ে চর্চা থামলেও, সে দেশর পরিস্থিতি যে এখনও যেই কে সেই তিমিরেই পড়ে রয়েছে, তা প্রমাণ হল তসলিমা নাসরিনের করা দুটি টুইট থেকে।
ক্রমাগত নিজের দেশ নিয়ে পোস্ট করে চলেছেন তিনি। অবশ্য অনেকদিন আগেই বাংলাদেশ ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। তবে তাতে কখনো নিজের দেশের সাধারণ মানুষের হয়ে গলা তোলা বন্ধ করেননি। তাঁর প্রতিবাদী সত্তাকে থেমে যেতে দেননি।
আরও পড়ুন:
শনিবার রাতে তসলিমা টুইট করেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষক, অফিসার ও পুলিশ, ডাক্তারদের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করছে জিহাদিরা।’ এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি টুইট করে লেখেন, ‘আমি ৩২ বছর আগে লজ্জা লিখেছিলাম। আর সেরকম ঘটনা আজও ঘটে চলেছে। হিন্দুদের ভয় দেখানো হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, আর তারপর তাঁরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
প্রায় ১ মাস ধরে অশান্ত পরিস্থিতি বাংলাদেশের। শুরুটা করেছিলেন সে দেশের তরুণরা, চাকরিতে কোটা সংস্কারের প্রতিবাদে। তবে সেখানে ছাত্র জমায়েতে নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে বাংলাদেশের পুলিশের উপর। যার ফলে বহু তরুণ তরতাজা প্রাণ চলে যায় অকালে। আর তারপর গর্জে ওঠে গোটা দেশ। আন্দোলন এত বড় রূপ নেয় যে অগস্টের ৬ তারিখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারত চলে আসেন।
তবে এরপরই বদলে যায় আন্দোলনের মুখ। দেখা যায় আন্দোলনকারীরা গণভবনে লুঠ চালায়। বাড়ি বাড়ি ডাকাতি শুরু হয়। এমনকী, হিন্দু মন্দিরভাঙচুর, হিন্দুদের হত্যাও করা হয়।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার দফতর জানিয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ অগস্ট পর্যন্ত অশান্ত বাংলাদেশে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৬৫০ জন। শুক্রবার ‘প্রিলিমিনারি অ্যানালিসিস অফ রিসেন্ট প্রোটেস্ট অ্যান্ড আনরেস্ট ইন বাংলাদেশ’ নামে ১০ পাতার একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে জেনেভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের দফতরে। সেখানে বলা হয়েছে ১৬ জুলাই থেকে ৪ অগস্ট অশান্ত বাংলাদেশে মারা গিয়েছেন প্রায় ৪০০ জন। এরপর যেই ৫-৬ অগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগে উত্তাল হয় বাংলাদেশ, সেই দু দিনে প্রান হারায় আরও ২৫০ জন। তবে হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরও হত্যালীলা কমেনি। এমনকী, সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরেও অত্যাচার যে থামেনি, তা তো তসলিমার পোস্ট থেকেই স্পষ্ট।