তসলিমা নাসরিন কখনই কালোকে কালো, সাদাকে সাদা বলতে পিছপা হননি। তিনি বাংলাদেশ না যেতে পারলেও সেখানকার সমস্ত আপডেট রাখেন, সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে নিজের মতামত জানান। কিন্তু এদিন যেটা ঘটল তারপর তিনি প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন। কী ঘটেছে? তাঁর বই প্রকাশ করার 'অপরাধে' বাংলাদেশ বইমেলায় একটি স্টলে ভাঙচুর চালানো হয়।
কী পোস্ট করেছেন তসলিমা?
এদিন এক্স হ্যান্ডেল অর্থাৎ যা আগে টুইটার নামে পরিচিত সেখানে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ বইমেলায় স্টল নম্বর ১২৮ অর্থাৎ সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে ভাঙচুর চালাচ্ছেন একদল মানুষ। স্টলের বাইরে উত্তেজিত জনতার ভিড়। এই প্রকাশনা সংস্থার তরফেই তাঁর বই ছাপানোর 'অপরাধে' ভাঙচুর চালানো হয়।
লজ্জা উপন্যাসের লেখিকা এদিন এই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখেন, 'আজ জিহাদি ধর্মীয় চরমপন্থীরা বাংলাদেশের বইমেলায় সব্যসাচী প্রকাশনার স্টলে আক্রমণ চালায়। তাঁদের অপরাধ যে তাঁরা আমার বই প্রকাশ করেছে। বইমেলার কর্তারা এবং স্থানীয় থানার পুলিশ এসে ওঁদের আদেশ দেন আমার বই সরানোর জন্য। সেটা সরিয়ে দেওয়ার পরও চরমপন্থীরা আক্রমণ চালায়, স্টল ভাঙচুর করে, সেটাকে বন্ধ পর্যন্ত করে দেয়।'
এরপরই সেই পোস্টে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। লেখেন, 'সরকার এই চরমপন্থী, জিহাদিদের সমর্থন করছে দেশজুড়ে।'
আরও পড়ুন: 'ক্রাইম ছবির থেকেও ভয়ঙ্কর' সানিয়ার Mrs! ট্রেলারের টুকরো টুকরো ক্লিপ দেখে কী বলছেন মহিলারা?
শুধু তাই নয়, তিনি এদিন সকালে ফেসবুকের পাতায় একটি পোস্ট করে লেখেন, 'চুম্বন কেন বইমেলায় নিষিদ্ধ? যেহেতু বইটি আমার লেখা। তিরিশ বছর আগে আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল তখনকার সরকার। তিরিশ বছর আমার বই বলতে প্রায় কিছুই প্রকাশিত হয়নি বাংলাদেশে। তারপরও আমার লেখাকে এত ভয়? এখন গল্পগ্রন্থ চুম্বনটিও ইউনুস সরকারের সইছে না? আগের সরকারগুলো যত না স্বৈরাচারী ছিল, এই ইউনুস সরকার তাদের চেয়ে হাজার গুণ বেশি স্বৈরাচারী। চুম্বন বইখানা পড়ে দেখুন মিস্টার ইউনুস এবং বাংলা একাডেমির পরিচালক, মানবিক গল্পগুলো নিষিদ্ধ করতে মন চায় কেন আপনাদের? মাদ্রাসার একটা সন্ত্রাসী আমার বই মেলায় থাকুক চায় না বলেই তো? সন্ত্রাসীরা যা খেতে চাইছে, সেটাই তাদের খাওয়াচ্ছেন আপনারা। এভাবেই বাক স্বাধীনতার বিপক্ষে, মত প্রকাশের অধিকারের পক্ষে, গণতন্ত্রের বিপক্ষে যাচ্ছেন। এভাবেই সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করছেন। ধিক।'