বাংলাদেশে আগুন জ্বলছে। যে আগুন জ্বলেছিল ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে, ধীরে ধীরে পরে সেটাই সরকার বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী পথ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। গণভবন দখল করেছেন বিক্ষোভকারীরা। হাতুড়ি দিয়ে ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ রয়েছে সেনার দখলে। কিন্তু দেশের পরিস্থিতিতে কী বলছেন দেশ থেকে বিতারিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন?
নিজের X (পূর্বে টুইটার) হ্যান্ডেলের পাতায় তসলিমা হাসিনাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া পুরনো ইতিহাস। বোঝাতে চেয়েছেন history repeats itself-কথাটি। বলা ভালো, 'আসলে ইতিহাস ফিসফিস কথা কথা হয়'। তসলিমা লিখেছেন, আমার মা যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন তাঁকে দেখতে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর ইসলামপন্থীদের খুশি করার জন্য হাসিনা আমাকে আমার দেশ থেকে বের করে দিয়েছিলেন। আমাকে আর কখনও দেশে প্রবেশ করতে দেননি। ছাত্র আন্দোলনে সেই ইসলামপন্থীরাই আজ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে।'
তবে হাসিনাকে পুরনো কথা মনে করালেও বাংলাদেশে সেনা শাসনের বিরোধিতাই করেছেন তসলিমা। তাই তাঁর দেশে যখন সেনা অন্তর্বতী সরকার গঠন করেছে, ঠিক তখন তসলিমা নাসরিন ফেসবুকে পাকিস্তানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘সেনাবাহিনীর হাতে যেন ক্ষমতা না যায়। দেশ যেন পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ না করে। রাজনৈতিক দলের হাতে যেন ক্ষমতা থাকে। যেন কোনও অবস্থাতেই গণতন্ত্র বিসর্জন না দেওয়া হয়।’
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দুদের উপর হামলার খবর মিলছে, সেপ্রসঙ্গে তসলিমা লিখেছেন, ‘সারা দেশে হিন্দুদের ওপর হামলা শুরু হয়ে গেছে। হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রী যারা দুলে দুলে আমার সোনার বাংলা, কারার ওই লৌহ কপাট, ও আমার দেশের মাটি গাইল, তারা কোথায়? তারা কি গণভবণের হাঁস মুরগি খাসি চুরি করায় আর হাসিনার ব্রা চুরি করায় ব্যস্ত? নাকি তাদের দায়িত্ব তাদের জিহাদি ভাইব্রাদারদের হাত থেকে দেশের মাটির দেশের মানুষদের প্রাণ বাঁচানো?’
তবে বাংলাদেশে যেন শেষপর্যন্ত ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার আসে সেই প্রার্থনাই করেছেন তসলিমা। লিখেছেন, ‘হাসিনার দুঃশাসনের সমাপ্তি হলো। হাসিনার মাফিয়া, হাসিনার ফ্যাসিজম আর নার্সিসিজমের যুগ শেষ হলো। এখন যে সরকারই আসুক, যেন মৌলবাদবিরোধী সরকার আসে। যেন ধর্মনিরপেক্ষ সরকার আসে।’