সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর উজ্জ্বল উপস্থিতি। আরজি কর থেকে বাংলাদেশের গণঅভ্য়ুত্থান, হিন্দুদের উপর অত্যাচার, সব নিয়েই ফেসবুকে সরব হন তসলিমা নাসরিন। কট্টরপন্থীদের চোখ রাঙানিকে কোনওদিনই পাত্তা দেননি তসলিমা। হালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে নিয়েও বোমা ফাটিয়েছেন ‘লজ্জা’র স্রষ্টা। এবার অন্য আতঙ্কের কথা জানালেন তসলিমা নাসরিন।
দেশছাড়া হয়েছেন আগেই। দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ‘আশ্রিতা’ তিনি। এবার আর কি ভারতে থাকতে পারবেন? আশঙ্কায় ভুগছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। গত জুলাই মাসেই তসলিমার ভারতে থাকার রেসিডেন্স পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেটি কবে রিনিউ হবে, আব আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে ধন্দে তসলিমা নাসরিন। আজতককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি যদি পারমিট না পাই, নিশ্চিত ভাবেই মারা যাব। আমি এমন অবস্থায় রয়েছি যে কোথাও যাওয়ার জায়গাই নেই।’
আপতত দিল্লিতে বসবাস করেন তসলিমা। ১৯৯৪ সালে দেশ ছাড়তে হয়েছিল তসলিমাকে। ইসলাম বিরুদ্ধ লেখালেখির জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন ইউরোপ-আমেরিকায় থাকার পর ভারতে ঠাঁই হয় তাঁর। ২০০৪ সাল থেকে টানা তিন বছর পশ্চিমবঙ্গে ছিলেন তসলিমা। এরপর ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ হওয়ার পর হুমকির মুখে পড়ে কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন। যদিও তসলিমার অভিযোগ সুনীল গঙ্গোপাধ্য়ায়ের অঙ্গুলি হেলনে তাঁকে কলকাতা-ছাড়া করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুর পরেও সেই ক্ষোভের কথা প্রকাশ্যে আনেন তসলিমা।
কলকাতা ছাড়ার পর বেশ কয়েক বছর জয়পুরে ছিলেন তিনি, পরে দিল্লির বাসিন্দা হন। রেসিডেন্ট পারমিট দীর্ঘ সময় ধরে পুনর্নবীকরণ হলেও সম্প্রতি আটকে গিয়েছে।
তসলিমা জানান, ‘আমি অনলাইনেই পারমিটের স্টেটাস চেক করি। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য মেলেনি। এখনও ওয়েবসাইটে পারমিটের স্টেটাস আপডেটিং দেখাচ্ছে।’
হালে ভারত-বাংলাদেশে কূটনীতিক সম্পর্ক খানিক নড়বড়ে। এর জেরেই কি আটকে গিয়েছে তসলিমার পারমিট? লেখিকা স্পষ্ট জানান, বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে তাঁর যোগ নেই। কারণ তিনি সুইডিশ নাগরিক হিসাবে ভারতে থাকেন। এর আগে ২০১৭ সালে একবার প্রযুক্তিগত ক্রুটির কারণে তসলিমার রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল।
তসলিমার বিশ্বাস তাঁকে দেশছাড়া করার পিছনে পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুজনেই সামন দোষী। কেউই যায়নি, তসলিমা বাংলাদেশে থাকুক। তসলিমার পারমিট ইস্যুতে ভারত সরকারের তরফে এখনও কোনও মন্তব্য় সামনে আসেনি।