বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তির খবর বিগত কয়েকমাস ধরেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করে চলেছেন তসলিমা নাসরিন। তবে নিজে ভারতবর্ষের রাজধানী দিল্লিতে মুখোমুখি হলেন এক অন্যরকম অভিজ্ঞতার। তাই তিনি ভাগ করে নিলেন সকল অনুরাগীর সঙ্গে।
তিনি ধর্মে মুসলিম, তা সত্ত্বেও রাজধারনীর এক পুজো উদ্বোধনে তাঁর ডাক পড়েছিল। সেই নিয়ে তসলিমা লিখলেন, ‘আমি হিন্দু নই। আমি কোনও ধর্মবিশ্বাসী মানুষ নই। কিন্তু মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। তা সত্ত্বেও আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হলো হিন্দুদের পুজো উদ্বোধন করার জন্য। এর নামই অসাম্প্রদায়িকতা।’
আরও পড়ুন: আরজি কর ধর্ষণকে ‘বিচ্ছিন্ন’ ঘটনা বলে বিতর্কে, দুর্গা পুজো উদ্বোধনে গিয়ে সৌরভ বললেন, ‘এই শেষ…’
সঙ্গে তিনি আরও জোড়েন, ‘যখন আমার জন্মের দেশ বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকতার আগুনে পুড়ছে প্রতিদিন, তখন কোথাও অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। আশা জাগে যে, একদিন মানুষ সত্যিকার শিক্ষিত হবে, সভ্য হবে, সমাজ থেকে সাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিহ্ন করবে। হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান ইহুদি এবং আস্তিক নাস্তিক --পরস্পরের প্রতি তাদের ঘৃণা দূর করবে।জাত জেন্ডার ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা আর শ্রদ্ধাই পৃথিবীকে সুন্দর করবে, বাসযোগ্য করবে।’
আরও পড়ুন: স্বস্তিকার খোঁপার গাঁদা ফুলের প্রেমে পড়লেন নাকি কুণাল ঘোষ? নায়িকার ছবি দিয়ে দিলেন গদগদ ক্যাপশন
সেখানকার পুজো উদ্বোধন, প্রদীপ জ্বালানোর বেশ কিছু ছবি-ভিডিয়োও শেয়ার করলেন তসলিমা। লাল পাড়ের সাদা গরদের শাড়ি পরেছিলেন। তিনি এই পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘গতকাল সন্ধ্যেয় আমি আর নাট্যশিল্পী প্রদীপ গাঙ্গুলি পশ্চিম বিহার এলাকার পুজো উদবোধন করতে গিয়েছিলাম। প্রদীপ জ্বালিয়ে উদবোধন করলাম দুর্গা পুজোর, বাঙালির সবচেয়ে বড় শারদীয় উৎসবের।’
তসলিমা স্পষ্টই জানেন, হয়তো কিছু ধর্মান্ধ মানুষ চলে আসবে তাঁকে আক্রমণ করতে। তাই আগেই বলে রাখলেন, ‘কেউ হয়তো বলবে 'শুধু হিন্দুর পুজোয় কেন, মুসলমানের ধর্মকর্মেও তো যেতে পারো!' নিশ্চয়ই যাবো, আমাকে যদি মসজিদে মসজিদে নামাজের ইমামতি করতে দেয়, নিশ্চয়ই করবো।’
বহুবছর বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত তিনি। নিজের জন্মভূমিতে পা রাখার অনুমতিই নেই আর তসলিমার। এমনকী, বাম আমল থেকে পশ্চিমবঙ্গেও আসার অনুমতি নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের সময়ও তিনি নিষিদ্ধ বাংলায়। বাঙালি তসলিমা গোটা ভারতবর্ষের যেখানে ইচ্ছে যেতে পারেন, শুধু পারেন না পশ্চিমবাংলায় আসতে। লেখিকার তরফে, মমতার সরকারকে বারবার অনুরোধ করেও কোনো সুরাহা হয়নি।