মঙ্গলবার মুক্তি পেয়েছে সৃজিতের পুজো রিলিজ টেক্কা। আর এইদিনই আচমকা আলোচনায় পরিচালকের দাম্পত্য জীবন। বা বলা ভালো পরিচালকের ‘ভাঙা দাম্পত্য’ নিয়ে ফের ফিসফিসানি উস্কে দিলেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই সরব লেখিকা। সামজ থেকে অর্থনীতি কিংবা রাজনীতি, সব বিষয় নিয়েই সমাজ মাধ্যমে সরব হন তসলিমা।
এবার দুই বাংলার তারকাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সুখকর না হওয়া নিয়ে আফসোস জাহির করতে দেখা গেল তসলিমাকে। এই প্রসঙ্গে দুটি জুটির প্রসঙ্গ টানলেন তিনি, এক কবীর সুমন ও সাবিনা ইয়াসমিন এবং দুই, সৃজিত-মিথিলা। ওপার বাংলার দুই শিল্পী এই বাংলার বউমা হয়েছিলেন। কিন্তু তারপর ‘নিস্তবব্ধতা’।
তসলিমার মনে প্রশ্ন, দুই বাংলার শিল্পীদের বিয়ে টেকে না কেন? তসলিমা ফেসবুকে লেখেন, ‘বাংলাদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের মধ্যে রোমান্টিক বা বৈবাহিক সম্পর্ক কেন টিকছে না? সাবিনা ইয়াসমিন আর কবীর সুমন বিয়ে করলেন। বিরাট হৈ চৈ হলো। দুজনে কিছুদিন একসঙ্গে গান গাইলেন। এরপর নিস্তব্ধতা। যে যাঁর মতো যাঁর যাঁর দেশে জীবন যাপন করছেন। সাবিনা আর সুমনের মধ্যে কোনও সম্পর্ক অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। এর পর সৃজিত আর মিথিলা বিয়ে করলেন। বিরাট হৈ চৈ হলো। দুজনে কিছুদিন একসঙ্গে চলাফেরা করলেন। এরপর নিস্তব্ধতা। যে যাঁর মতো যাঁর যাঁর দেশে জীবন যাপন করছেন। সৃজিত তাঁর ১০/১২টা সাপ নিয়ে, আর মিথিলা তাঁর কন্যা নিয়ে। মিলন থাকলে বিচ্ছেদ থাকে, এ নতুন কিছু নয়। কিন্তু তারপরও মনে হয় দুই দেশের মানুষের মধ্যে হৃদয়ের বন্ধন দৃঢ় হলে অসাম্প্রদায়িকতার নিদর্শন চমৎকার হতে পারতো।’
ভালোবেসে বছর চারেক আগে বিয়ে করেছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও রাফিয়াত রাশিদ মিথিলা। মেয়ে আইরাকে নিয়ে বছর খানেক কলকাতাতে থিতুও হয়েছিলেন বাংলাদেশি কন্যে। কিন্তু সে সব এখন অতীত। আইরাকে ফের বাংলাদেশর স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন মিথিলা। দাদু-দিদিমার কাছ বড় হচ্ছে সে। কাজের সূত্রে কখনও আফ্রিকার তানজানিয়া তো কখনও ইউরোপের নানান থাকেন তিনি। সময়-সুযোগ পেলে দিন কয়েকের জন্য কলকাতা আসেন।
এর জেরেই সৃজিত-মিথিলার দাম্পত্য নিয়ে ফিসফিসানির শেষ নেই। মাঝেমাধ্যেই তাঁদের ডিভোর্সের চর্চা শোনা যায়, কিন্তু প্রত্য়েকবারই সেই গুঞ্জনকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দুইপক্ষ। লং ডিসট্যান্স বিয়েটা টিকিয়ে রাখতে মরিয়া দুজনেই। কিন্তু তা বলে তো আর গুঞ্জন থেমে থাকে না!
আরও পড়ুন-মিথিলার সঙ্গে ডিভোর্স চর্চা জারি, জন্মদিনে কোন পার্টনারকে ‘লাভ ইউ’ বললেন সৃজিত?
অন্যদিকে নতুন শতাব্দীতে নতুন শুরু করেছিলেন কবীর সুমন। চতুর্থ স্ত্রী মারিয়ার সঙ্গে ডিভোর্সের মঞ্জুর হওয়ার আগেই বাংলাদেশের গায়িকা সাবিনা ইয়াসমিনকে বিয়ে করেছিলেন। সাবিনাকে বিয়ে করতেই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন কবীর সুমন। বছর কয়েক একসঙ্গে থাকার পরই আলাদা হন দুজনে। যদিও আইনত আজও বিচ্ছেদ হয়নি দুজনের।
তসলিমা নিজেও তিনবার বিয়ে করেছেন, তবে সংসার টেকেনি। তাঁর সাফল্য, তাঁর কর্মজীবন সবকিছু ম্লান হয়ে যায় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কাছ, খানিক আফসোস তাঁর। একবার তো তিনি সরাসরি বলেছিলেন, নিজের মতো জীবন কাটাতে পেরেছেন কারণ ‘কোনও স্বামীর সঙ্গে সংসার করিনি।’
আরও পড়ুন-ভেঙেছে তিন বিয়ে! 'কোনও স্বামীর সঙ্গে সংসার করিনি...', একা বাঁচার টোটকা তসলিমার
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময়ই তসলিমা রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহকে বিয়ে করেন। ১৯৮১ বা ১৯৮২ সাল নাগাদ, ১৯৮৬ সালে ভেঙে যায় সেই বিয়ে। পরবর্তীতে নাঈমুল ইসলাম খানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তবে টেকেনি সেই বিয়েও। নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই ভাঙে লেখিকার দ্বিতীয় বিয়ে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মিনার মাহমুদকে বিয়ে করে নেন তাসলিমা। তবে সেই বিয়েও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।