গরম কাল এলেই বাঙালির পাতে পড়ে পান্তা ভাত। জল ঢালা ভাতে, লেবু-লঙ্কা মিশিয়ে কখনো আলুভর্তা তো কখনো নানা রকমের ভাজা দিয়ে যাঁরা খেয়েছেন, তাঁরা জানেন এই স্বাদের কোনও তুলনাই হয় না। শহুরে জীবনে অবশ্য বর্তমানে পান্তা ভাত খাওয়ার চল অনেকটাই কমে এসেছে। কিন্তু গ্রামেগঞ্জে এখনও এই খাবারই ভরসা। সেখানে ফ্রিজের আরাম নেই, তাই বেচে যাওয়া ভাত, জল ঢেলে রেখে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ সময় সেটা দিয়েই হয়ে যায় প্রাতঃরাশ। তবে সেই খাবার পান্তাভাতকে পৃথিবীর অন্যতম 'অখাদ্য' খাবার হিসেবে চিহ্নিত করেছে Taste Atlas।
‘অখাদ্য’ বলা হল পান্তা ভাতকে:
Taste Atlas হল পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের খাবার-দাবারের অনলাইন গাইড। উইকিপিডিয়ার বর্ণনা অনুসারে, ‘TasteAtlas হল ঐতিহ্যবাহী খাবারের একটি অনলাইন নির্দেশিকা, যা খাঁটি রেসিপি, খাদ্য সমালোচন- পর্যালোচনা করে। নানা এলাকার আতিহ্যবাহী খাবার, রেস্তোরাঁকে তুলে ধরে। এটি একটি ইন্টারেক্টিভ গ্লোবাল ফুড ম্যাপ। ১০ হাজারেরও বেশি খাবারের খোঁজ রয়েছে এখানে, আছে ৯ হাজারের উপর রেস্তোরাঁ।’
আরও পড়ুন: নাতাশা অতীত, হার্দিকের জীবনে নতুন প্রেম? ক্রিকেট তারকার সঙ্গে কে এই সুন্দরী
প্রচুর ভরতীয় খাবারকে ‘সেরা’ তকমা দিয়েছে এই Taste Atlas। তবে এবার 'অখাদ্য' খাবারের তালিকায় নাম দেখা গেল পান্তা ভাতের। আরও কিছু ভারতীয় খাবার সেখানে রয়েছে, যেমন, জলজিরা, উত্তর ভারতের গজক, দক্ষিণ ভারতের ঠেঙ্গাই সাদম, উত্তর-পূর্ব ভারতের পান্তাভাত, পঞ্জাবের আলু-বেগুন, উত্তরপ্রদেশ-রাজস্থানের ঠান্ডাই, কেরলের আচাপ্পম, হায়দরাবাদের মিরচি কা সালান, তামিলনাড়ুর উপমা এবং মালপোয়া।
আর এতেই খচে লাল বাঙালি তথা ভারতীয়রা। উপমা, মালপোয়া, জলজিরে-র মতো খাবার কী করে অখাদ্য হয়, তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। আর পান্তাভাতকে অখাদ্য বলার কোনও অর্থই খুঁজে পাচ্ছেন না নেটিজেনরা। টুইটার থুরি এক্সে বর্তমানে ট্রেন্ড করছে এই টপিক।
আরও পড়ুন: ‘বাবা ছোট জিনিসকেও বড় করে…’! বলিউডে পা রেখেই আমিরকে নিয়ে মন্তব্য জুনায়েদের
কোথায় কোথায় খাওয়া হয় পান্তা?
পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা (পাখালা), তামিলনাড়ু (কঞ্জি), অসম (পয়তা ভাত), (বাসিয়া ভাত) বিহার এবং ঝাড়খণ্ডেই (বাসিয়া ভাত) পান্তাভাত খাওয়ার চল রয়েছে। এমনকী, কিছুদিন আগে মাস্টারশেফ অফ অস্ট্রেলিয়াতেও পান্তাভাত পরিবেশন করেছিলেন এক প্রতিযোগী। যা চেখে রীতিমতো চোখ কপালে উঠেছিল বিচারকদের।
আরও পড়ুন: অনন্যা যেন বেগুনি পুতুল, রণবীরের কুর্তার বিশেষ লুক, আম্বানির বাড়ির শিবশক্তি পুজোয় আর কারা এলেন
পান্তা ভাতের উপকারিতা:
প্রসঙ্গত, পান্তাভাতের উপকারও কিন্তু কিছু কম নয়। পান্তা ভাতের থেকে পাওয়া যায় আয়রন, যা আয়রন ডিফিশিয়েন্সি কিংবা এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা কমায়। মাত্র একশগ্রাম পান্তা ভাতে প্রায় তিন ট্রিলিয়ন ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে যাদের প্রোবায়োটিকস বলে। যার কাজ হলো শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে ভালো রাখা।
গরম ভাতে যে পরিমাণ ফ্যাট থাকে পান্তাভাতে তা প্রায় ৬ গুণ কমে যায়। ফলে রোগা থাকতে সাহায্য করে। সঙ্গে এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সকালে পান্তা ভাত খেলে সারাদিনের কাজের এনার্জি বহুগুণ বেড়ে যায়।