RG কর কাণ্ডের পর এরাজ্যের মানুুষ এখন ফুঁসছে। ঘটনার পর ৩৬ দিন পার হয়েছে, তবু এখনও বিচার পায়নি নির্যাতিতা। প্রতিবাদে সামিল আম-আদমি থেকে সাধারণ জনতা। বহু মানুষ আবার শাসক দলের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। তাঁদের সাফ কথা, এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না তৃণমূল সরকার।
এদিকে এসবের মাঝেই তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একটা ভিডিয়ো পোস্ট করছেন।সেখানে দেখা যাচ্ছে অভিনেত্রী মৌসুমী ভট্টাচার্য-কে। তিনি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলছেন, ‘এই কুণাল ঘোষ, আর এই যে ছেলেটা, আমি নামও ভুলে যাই, হ্যাঁ দেবাংশু। যেদিন পাবলিকের হাতে পড়বে, দেখব কী হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাঁচাতে আসবে না। বাড়িতে বসে বসে প্রেসকে লেকচার দেয়। একদিন না একদিন পাবলিকের সামনে আসতেই হবে। একদিন না একদিন, ডাক্তারের কাছেও যেতে হবে। অসুস্থ তো সবাই হয়। সেই দিনটা খুব ভয়ানক ওদের কাছে।’
আর তারপরই মৌসুমীর ওই ভিডিয়োটি কুণাল ঘোষ নিজে এক্স হ্যান্ডেল ও ফেসবুকের পাতায় শেয়ার করেন। লেখেন, ‘হ্যাঁরে দেবাংশু, তোর পাত্রী দেখার কাজটা এগোব? তোর সঙ্গে বেশ মানাবে। রাগের মধ্যেই থাকে অনুরাগের বীজ। তাছাড়া, কেমন সংস্কার মানে, স্বামীর নাম মুখে আনতে চায় না। আমার তো নিজেকে এখনই ভাসুর ভাসুর লাগছে।’
কুণাল ঘোষের এই মন্তব্যে পাল্টা মৌসুমীকে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি লেখেন, ‘বলছো তাহলে কুণাল দা? তুমি খুঁজে দিচ্ছো যখন এত সহজে কি না বলতে পারি! তবে গলা শুনে মনে হচ্ছে বড় দজ্জাল। টিকবে কি?’
পরে ফের লেখেন, ‘এবাবা, এমা… দাঁড়াও দাঁড়াও বিবাহিত তো সরি….। সিরিয়ালে কাজ নেই বদন বিগড়ে গেছে। ডাক্তারদের আন্দোলনে বিরিয়ানি খেতে গেছে। আমাদের নাম নিয়ে একটু ফুটেজও থাক।’
দেবাংশু ভট্টাচার্যের এধরনের ভাষার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেতা পরিচালক, অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায়। তথাগত ফেসবুকের পাতায় লেখেন, ‘কোন শতাব্দীতে বাস করছি আমরা,এরা কারা,বাক স্বাধীনতার নামে এই নির্লজ্জ কুৎসিত অপমান একজন অভিনেত্রীকে। ক্ষমতাশালী পক্ষের দায়িত্ববান মুখপাত্রদের মহিলাদের প্রতি,অভিনেত্রীদের প্রতি যদি মুখের এইরকম ভাষা হয় তাহলে কিসের বিচার,কিসের লড়াই।তাহলে পার্থক্য কোথায় "রগড়ে দেব" পার্টি আর এই সদস্যদের। লজ্জার,ভয়ংকর লজ্জার,ধিক্কার জানাই। মানুষ আর মানুষের চামড়ার আড়ালে অমানুষ চিনে নেওয়ার সময় এসে গেছে।’
মৌসুমীকে নিয়ে এধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন টলিপাড়ার আরও এক শিল্পী রিমঝিম গুপ্তা। রিমঝিম লেখেন, ‘ছি ছি ছি !!!! এ কোথায় বাস করি আমরা.. প্রচন্ডু রাগ হচ্ছে...পারা যাচ্চেনা আর কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি চাই। লজ্জা লাগে ওরা আমাদের সমাজের অংশ..নরক।’
যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আক্রমণের মুখ দেবাংশু ভট্টচার্য নিজের বক্তব্যকে রি-এডিট করে নিয়েছেন, তা স্পষ্ট। এখন তাঁর পোস্টে শুধুই লেখা, ‘গলা শুনেই মনে হচ্ছে বড় দজ্জাল মহিলা গো! বিনয় কোঙ্গারের মত "লাইফ হেল" করে দেবে..’। যদিও তিনি যতই লেখা বদলে নিন, ইতিমধ্যেই তাঁর মন্তব্য ও পোস্টের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।