Bibriti-Tathagata: 'একটা সংসার ভেঙে এই বিষাক্ত মন নিয়ে কীভাবে…', প্রকাশ্যে অপমান, হাসির খোরাক বিবৃতি, কী বলছেন তথাগত?

সঞ্চালক তাঁকে বলে বসেন, ‘দেবী চৌধুরানীতে তো অনেক স্টারকাস্ট আছে, তোমাকে হঠাৎ কী জন্য নিল?’ বিবৃতির জবাব ছিল, ‘আমি যোগ্য তাই’। এরপরই আসে পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেমের প্রসঙ্গ। সঞ্চলক বলেন, ‘কেরিয়ারের গ্রাফটা উপরের দিকে উঠছে কি পরিচালকদের সংসার ভেঙে?’

চর্চায় অভিনেত্রী বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়। কারণটা তাঁর অভিনয় নয়, নিজে যেচে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে অপমানিত হতে গিয়েছিলেন বিবৃতি। আর তাতেই তাঁকে নিয়ে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া। আর এসবই ঘটেছে ইউটিউবার 'লাফটারসেন'-এর ইউটিউব চ্যানেলে। মিতা আন্টি সেজে বিবৃতিকে গুছিয়ে অপমান করেছেন 'লাফটারসেন' ওরফে নিরঞ্জন মণ্ডল। আর নিজেকে হাসির পাত্র করে তোলার জন্য যখন বিবৃতিকে নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরই চর্চিত প্রেমিক তথাগত মুখোপাধ্যায়। পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলেছেন, ‘দারুণ, দুর্দান্ত বিবৃতি’।

ঠিক কী ঘটেছে?

কী ঘটেছে, তা অবশ্য এতক্ষণে নেটপাড়ার দৌলতে বহু লোকজনই জানেন। মঞ্চটা লাফটার সেনের ইউটিউব চ্যানেলের শো 'টোস্টিং উইথ মিতা আন্টি' (TOASTING with Mita Aunty)। আর সেই শোয়েরই অতিথি হিসাবে হাজির হয়েছিলেন অভিনেত্রী বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বিবৃতির মোটা ভ্রু, অভিনয় থেকে প্রেমিক তথাগত মুখোপাধ্যায় কোনও কিছু নিয়েই প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি সঞ্চালক। শুরুতেই বিবৃতিকে জোড়া ভ্রু নিয়ে আক্রমণ করা হয়। এরপর কথাবার্তার মাঝেই একজন সেখানে থাকে একটা গাছের ধুলো ঝাড়তে এলে সঞ্চালক ব্যঙ্গ করে বলেন, ‘প্লিজ বিবৃতিকে তোমারা ঝেঁটিয়ে বিদেয় কোরো না।’ শুরুতে বিবৃতি অবশ্যে বিষয়টা হাসিমুখেই সামলাচ্ছিলেন।

এরপর সঞ্চালক তাঁকে বলে বসেন, ‘দেবী চৌধুরানীতে তো অনেক স্টারকাস্ট আছে, তোমাকে হঠাৎ কী জন্য নিল?’ বিবৃতির জবাব ছিল, ‘আমি যোগ্য তাই’। এরপরই আসে পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর প্রেমের প্রসঙ্গ। সঞ্চলক বলেন, ‘কেরিয়ারের গ্রাফটা উপরের দিকে উঠছে কি পরিচালকদের সংসার ভেঙে?’

একথায় একটু রেগে গিয়ে বিবৃতি বলেন, ‘আমি যদি পরিচালকদের সংসার ভাঙতাম, তাহলে অনেক বড় বড় ছবি করতাম, সেটা দিয়ে বক্স অফিসের রেকর্ড ভাঙতাম, তাই না?’ এরপর সরাসরি আসে তথাগত (মুখোপাধ্যায়)র সংসার ভাঙার প্রসঙ্গ। সঞ্চালক বিবৃতিকে 'ঝগড়ুটে', ‘বিষাক্ত’ বলে আক্রমণ করে বলেন, ‘এত বিষাক্ত মন নিয়ে কীভাবে সংসার করছ তথাগতর সঙ্গে’? এরপরই কথাকাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছোয়, বেজায় চটে রেগে গিয়ে শো ছেড়ে বের হয়ে যান বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়। তবে এই রাগ, প্রশ্ন-উত্তর সবটাই হয়েছে 'ছদ্ম অভিনয়ে', অর্থাৎ পুরোটাই শোয়ের চিত্রনাট্যের অংশ।।

তবে এসব দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, যেচে অপমানিত হতে কেন সেই শোয়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়? তবে কি ছবি বা নিজের প্রচারের জন্যই এত কাণ্ড! কেন গিয়েছিলেন হাসির খোরাক হতে?

এক্ষেত্রে যাঁকে জুড়ে বিবৃতিকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেই পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়ও বান্ধবীর এমন লড়াকু মনোভাবে প্রকাশ্যেই প্রশংসা করেছেন । সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুষ্ঠানের লিঙ্ক শেয়ার করে লিখেছেন, ‘দারুন,দুর্দান্ত বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, নিজেকে নিয়ে পাব্লিকলি মজা করতে অনেকটা সৎ সাহস লাগে।আর সে সমস্ত বিষয় নিয়ে যে সমস্ত বিষয় একজন মানুষকে বছরের পর বছর কোনঠাসা করে রাখে,জনতাকে উৎসাহ দেয় ডাইনি শিকারে, সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে নিজেকে হাসির খোরাক করতে তো রীতিমতো বুকের পাটা লাগে।আশেপাশে যা একেবারেই বিরল,বন্ধু হিসেবে, সিনিয়র হিসেবে, ল্যাতপ্যাতে মেরুদন্ডের এই বাঙালি শিল্পী কুলের তরফে কুর্নিশ।প্রথমবার বাঙালি অভিনেত্রীর এইরকম রোস্টিং এলাও করার জন্য,সরি টোস্টিং।’

কিন্তু এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া নিয়ে কী বক্তব্য বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়ের? এবিষয়ে বিবৃতি অবশ্য আনন্দবাজারকে বলেছেন, কাজের প্রচার নয়, এধরনের অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে প্রমাণ করাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। সাফ জানান, নিজেকে নিয়ে রসিকতা করার মতো মেরুদণ্ড তাঁর আছে। তিনি তারই প্রমাণ দিয়েছেন। আর তাঁর পিছনে তাঁকে নিয়ে যেধরনের আলোচনা হচ্ছে, সেসবের জবাব দিতেই তিনি এই অনুষ্ঠান মঞ্চ বেছে নিয়েছিলেন। জানান, অপপ্রচার, কটাক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করার মানসিকতা, সাহস তাঁর আছে।