দুর্গাপুজো মানেই হলমুখী হন দর্শকরা। তাই এই সময়টাকে টার্গেট করেন একাধিক প্রযোজক। তবে এই বছর পুজোর ছবির সংখ্যা অন্যবারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম। মাত্র তিনটি ছবি মহাপঞ্চমীর দিন বক্স অফিসে মুক্তি পেয়েছিল। কারণ এবার পরিস্থিতি কিছুটা উত্তাল। তাছাড়াও স্বাধীনতা দিবসের আবহে মুক্তি পাওয়া দুই ছবি সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘পদাতিক’ ও রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘বাবলি’ বক্সঅফিসে খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। যদিও এই দুই ছবি নিয়ে পরিচালক, প্রযোজক থেকে হল মালিকরাও বেশ আশাবাদী ছিলেন। তাই বহু বাংলা ছবির মুক্তিও সে সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যেমন ‘যমালয়ে জীবন্ত ভানু’। সেই জায়গায় পুজোর ছবি কী মানুষকে আদৌও হলমুখী করতে পারবে? এই প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দিয়েছিল। তবে ‘টেক্কা’ আর বহুরূপী'-এর সাফল্য নতুন করে আশা জুগিয়েছে সকলের মনে।
এবারের পুজোয় মুক্তি পেয়েছে দেবের ‘টেক্কা’। তাছাড়াও এই ছবির সঙ্গে একই দিনে মুক্তি পেয়েছে 'বহুরূপী' এবং ‘শাস্ত্রী’। তবে এদের মধ্যে ‘টেক্কা’ ও ‘বহুরূপী’ একে অন্যকে কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দিচ্ছে। ৬ দিন পর 'টেক্কা'-এর আয় কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে? দেবই বিজয়ার আবহে সেই খবর ভাগ করে নিলেন অনুরাগীদের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: আদিত্য অতীত, 'একসঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসি…' নতুন প্রেমিককের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন শ্রদ্ধা
কী লিখেছেন দেব?
সোমবার সমাজ মাধ্যমের পাতায় ছবির পোস্টার শেয়ার করে দেব জানান টেক্কা' মাত্র ৬ দিনে ভারতীয় মুদ্রায় ২ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা আয় করেছে। তাঁদের ছবিকে এত ভালোবাসা দেওয়ার জন্য দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অভিনেতা লিখেছেন, ‘আমাদের ছবিকে এতটা পছন্দ করার জন্য, ভালোবাসা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের ভালোবাসায় আমাদের ছবি মাত্র ৬ দিনে ২.৭৫ কোটি টাকা আয় করেছে। এইভাবেই আমাদের ছবিকে ভালোবাসা দিতে থাকুন, আপনাদের ভালোবাসায় এই আয় যেন আরও বাড়তে থাকে।’
যদিও উন্ডোজ প্রোডাকশন হাউজের তরফে বহুরূপীর আয় নিয়ে এখনও কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে যতটা শোনা যাচ্ছে সেই নিরিখে 'টেক্কা'-কে আয়ের নিরিখে টেক্কা দিয়ে ‘বহুরূপী’। এই ছবির আয় 'টেক্কা'র থেকেও বেশি। পুজোর অপর রিলিজ মিঠুনের ‘শাস্ত্রী’। যা সোহম চক্রবর্তী এবং সুরিন্দর ফিল্মসের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি, তার আয় সম্পর্কেও খুব একটা পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: 'তুমি সাগরের ঢেউয়ে....', অনশনমঞ্চে মৌসুমী ভৌমিকের গান ভাইরাল, কাঁদলেন ডাক্তার অর্ণব
প্রসঙ্গত, আরজি কর আবহে ‘টেক্কা’-এর আরও এক প্রধান মুখ স্বস্তিকা দাবি তুলেছিলেন ‘উৎসবে না ফেরার’! সঙ্গে ছবির পরিচালক সৃজিতও এই আন্দোলনে সরকার বিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন। ফলে স্পষ্টটই বেশ চিন্তায় ছিলেন নির্মাতারা। দেব পর্যন্ত স্বীকার করেছিলেন, ছবির ব্যবসা নিয়ে বর্তমান পরিস্থতে একটা অনিশ্চয়তা কাজ করছেই। তবে কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, বাংলা সিনেমা বা বাংলার তারাকারা, কারও থেকেই মুখ ফেরায়নি বাঙালি। যদিও স্বাধীনা দিবসের সময় এমনটা অনেকেই মনে করেছিলেন। কারণ তখন দুই বাংলা ছবি পদাতিক ও বাবলি রাজ্যে ব্যবসা করতে না পারলেও হিন্দি ছবি শ্রদ্ধা কাপুরের 'স্ত্রী ২' রাজ্যে বিরাট ব্যবসা করেছিল। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে মনে করেছিলেন যে বাঙালি দর্শক বাংলা ছবির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে পুজোতে অন্য চিত্র ধরা পড়ল, লাইন দিয়ে রাত জেগে ঠাকুর দেখার পাশাপাশি, ছবি দেখতেও লাইন দিচ্ছে বাঙালি। উৎসব আর প্রতিবাদ চলছে সমানতালে।