‘আমার মেয়েকে কে ফেরাবে?’ বড় বড় হরফে লেখা এমন পোস্টারের পাশে স্বস্তিকার চিন্তিত মুখ- শহরের রাস্ত গত দু-দিনে ছেয়ে গিয়েছে এই হোর্ডিং-এ। সৃজিতের পুজো রিলিজ ছবি টেক্কা। তারই প্রচারে এই হোর্ডিং। ছবির প্রচারে আরজি করের আবেগকে কাজে লাগানো হচ্ছে, এমনই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
আশ্চর্যজনকভাবে এই ছবির নায়ক তথা প্রযোজক তৃণমূল সাংসদ দেব। এই বিতর্ক নিয়ে তিনি মুখ খোলেননি ঠিকই। তবে শুক্রবার রাতে বদল এল পোস্টারে। ‘আমার মেয়ে’ বদলে গেল ‘আমার অবন্তিকা’য়। অর্থাৎ এবার সরাসরি চরিত্রের নাম দিয়েই প্রচারের আসরে সৃজিত-দেবরা। নতুন পোস্টারে লেখা, ‘আমার অবন্তিকাকে ফেরাবে কে?’ পাশের পোস্টারে দেবের মুখ। সেখানে লেখা ‘সময়’। এই অংশটি আগেও ছিল। তবে সেটিকে উহ্য রেখেই চলেছে কটাক্ষ, ট্রোলের বন্যা। 'উৎসবে ফিরব না, অথচ ছবির প্রচারে আরজি কর আবেগকে কাজে লাগাব', এই নিয়ে খোঁটা শুনতে হয়েছে স্বস্তিকাকে।
গত বুধবার,কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে 'টেক্কা' ছবির পোস্টারটি শেয়ার করেন। ক্যাপশনে লেখেন, 'যদিও ছবিটির বিষয়বস্তু অপহরণের, তবু, এই RG Kar আবহে ট্র্যাজেডিকে কাজে লাগিয়ে সিনেমার প্রমোশনের কৌশল একটু চোখে লাগছে। 'উৎসবে ফিরব না' অথচ 'সিনেমার পোস্টারে ফিরব', এটাও দ্বিচারিতা। সৃজিতের ছবি আমার প্রিয়। কিন্তু, যতই ছবির থিম হোক, সবাই বুঝবেন, কোন আবেগকে প্রচারে ব্যবহার করা হল।'
পোস্টার বিতর্কের জবাব দিয়েছেন স্বস্তিকা। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ‘ওনার (কুণাল ঘোষ) অনেক সময় জীবনে। উনি যা ইচ্ছে বলুন। উনি হয়ত ছোট থেকেই এই শিক্ষাই পেয়েছেন যে মহিলাদের কীভাবে আক্রমণ করতে হয়। ওনার বাবা-মা হয়ত ওটাই শিখিয়েছেন। আর আমার বাবা-মা শিখিয়েছেন এগুলোতে গা না করতে। আর আমি অত বড় কেউ নই, যে ডিরেক্টার, প্রডিউসারদের সঙ্গে ঝগড়া করতে যাব। জিগ্গেস করব যে এই পোস্টার কেন দিলে? এটা আমার কাজও নয়। যদি ঘোষ মহাশয়, ওনার পদবীটাও আবার সন্দীপ ঘোষেরই মতোই আর কি। বড়ই অদ্ভুত বিষয়…।’
আরজি কর কাণ্ডে প্রথম দিন থেকে সোচ্চার স্বস্তিকা। দেব যদিও সহ-অভিনেত্রীর ‘উৎসবে ফিরছি না’ মন্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারেননি। টেক্কার টিজার লঞ্চে নায়ক বলেছেন, দেব আরও জানান, ‘উৎসবটা সবার নিজের, কিন্তু প্রতিবাদটা সবার। আমি বলব উৎসবে ফিরছি না আবার নিজের ছবির প্রমোশন করছি, নিজের ইভেন্টগুলো করছি- সেটাও একটা খারাপ বার্তা। ঢাকিদের ৬-৮ মাসের খরচ চলে পুজোর সময়ের উপার্জন দিয়ে। আমরা সরকার বিরোধী হতে পারি, তবে বাংলার মানুষের বিরোধী হতে পারব না, দুটো আলাদা জিনিস। আমি সরকারের বিরোধী হতেই পারি, আজ এই সরকার আছে কাল অন্য সরকার আসবে। কিন্তু একটা জাস্টিস পাওয়ার জন্য আমি বাংলার অন্য মানুষের সঙ্গে অবিচার করতে পারি না। কেউ তো চাকরি বন্ধ করে প্রতিবাদ করছে না। সবাই প্রতিদিন কাজে যাচ্ছে, যেটা তোমাদের কাছে বিনোদন, সেটা আমার কাছে আমার রুজিরোজগার’।