গত মাসে ডিজনি+ হটস্টার-এ মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন কারণে খবরের শিরোনামে এসেছে 'দ্য এম্পায়ার'। অ্যালেক্স লুথারফোর্ড-এর লেখা 'এম্পায়ার অফ দ্য মুঘল' উপন্যাস অবলম্বনেই তৈরি হয়েছে এই আট এপিসোডের এই সিরিজ। মিত্রাক্ষর কুমার পরিচালিত 'দ্য এম্পায়ার'-এ মুঘল সম্রাট বাবরের চরিত্রে রয়েছেন কুণাল কাপুর, ডিনো রয়েছেন বাবরের চিরশত্রু কুখ্যাত মোহম্মদ সৈয়বনি খানের ভূমিকায়। রয়েছেন শাবানা আজমি এবং দ্রাষ্টি ধামি। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ডিজনি+হটস্টার ওটিটি প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিমিং শুরু হয়েছে 'দ্য এম্পায়ার'-এর। এই সিরিজ মুক্তির পরপরই নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন প্রখ্যাত বলি-পরিচালক কবীর খান।
কোনও ছবি কিংবা ওয়েব সিরিজের নাম না করে 'এক থা টাইগার' ছবি খ্যাত পরিচালকের অভিযোগ ছিল বলিউডে ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। মুঘলদের একমাত্র 'ভিলেন' হিসেবেই পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এইসব ছবি দেখে যে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ তাও জানিয়েছিলেন কবীর। 'বজরঙ্গি ভাইজান'-এর পরিচালকের দাবি ছিল যদি মুঘলদের 'ছোট' করতেই হয় তবে ঠিকঠাক প্রমাণ ও তথ্য সহকারে করা উচিত। দর্শকদের কাছে নির্দিষ্ট সব কারণ ও ঘটনা তুলে বোঝানো উচিত ছিল কোন প্রেক্ষিতে মুঘলদের পুরোপুরি অত্যাচারী বলা হচ্ছে। ছবির নির্মাতারা যদি এই বিষয়ে আরও গবেষণা করতেন, তাহলে বুঝতে পারতেন মুঘলদের আগাপাশতলা খারাপ হিসেবে দর্শকদের সামনে পেশ করা প্রায় অসম্ভব।
এখানেই না থেমে কবীর আরও বলেছেন বর্তমান আবহে মুঘলদের নীতি থেকে তাঁদের ইতিহাসকে খারাপ বলা দারুণ সহজ। মুঘল এবং ভারতের ইতিহাসে অন্যান্য মুসলিম সম্রাটদের অস্তিত্বকেই চরম খারাপ হিসেবে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা বর্তমানে প্রায় নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ফর্মুলায় ছবি হিট করানোর উপায়কে তিনি অত্যন্ত ঘৃণা করেন এবং সেইসব ছবির প্রতি অন্তত তাঁর ব্যক্তিগতভাবে কোনও সম্মান বেঁচে থাকে না।
এবারে 'দ্য এম্পায়ার' সিরিজের পরিচালক মিত্রাক্ষর কুমার পাল্টা মুখ খুললেন কবীরের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে। অত্যন্ত পরিশীলিত ভাষায় তিনি জানিয়েছেন কবীর খানের মতো এত বড় একজন পরিচালক যখন এই উক্তি করেছেন তখন নিশ্চয়ই কিছু বুঝেসুঝে করেছেন। অবশ্যই তাঁর এই মন্তব্যের পিছনে যুক্তিযুক্ত কোনও কারণ থাকবে। ওঁর প্রতি আমার সম্মান আজও অটুট। আরও বলেন, কবীরের ওই নির্দিষ্ট সাক্ষাৎকার যেহেতু তিনি এখনও পড়েননি, তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করাটা তাঁর ঠিক হবে না।
বক্তব্য শেষে তাঁর সংযোজন, 'এইমুহূর্তে চারপাশে পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধের নয়। তবে সবকিছুর মধ্যে ধর্মকে টেনে নিয়ে আসাটা অত্যন্ত অন্যায় বলেই মনে হয় আমার কাছে। আর সবকিছুর মধ্যে ধর্ম টেনে নিয়ে আসাটা অন্তত আমার ব্যক্তিগতভাবে গ্রহনযোগ্য নয়, এটুকু আমি জোরের সঙ্গে বলতে পারি!'