অনিশ্চিত ‘দ্য ইন্দ্রাণী মুখার্জি স্টোরি: ব্যুরিড ট্রুথ-এর ভবিষ্যত। ২৩-শে ফেব্রুয়ারি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাচ্ছে না এই ডকু-সিরিজ। বৃহস্পতিবার বম্বে হাইকোর্ট স্ট্রিমিং জায়েন্ট নেটফ্লিক্সকেে নির্দেশ দিয়ছে সিবিআই-এর জন্য এই সিরিজের প্রাক-মুক্তি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে। শিনা বোরা হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়কে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে এই ডকু-সিরিজ। আরও পড়ুন-মেয়ে শিনা বোরাকে খুনের অভিযোগ, ইন্দ্রাণীকে নিয়ে ডকু-সিরিজের মুক্তি রুখতে আদালতে CBI
নিম্ন আদালতের স্থগিতাদেশ না পাওয়ায় দেশের অন্যতম আলোচিত মার্ডার মিস্ট্রি শিনা বোরা হত্যা মামলার প্রেক্ষাপটে নির্মিতা এই ডকু- সিরিজের মুক্তিতে স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই।
বিচারপতি রেবতী মোহিত দেরে এবং বিচারপতি মঞ্জুষা দেশপান্ডের ডিভিশন বেঞ্চ পরামর্শ দিয়েছে যে সিবিআইয়ের স্থগিতাদেশের আবেদনের বিষয়ে কোনও যুক্তি উপস্থাপনের আগে সিরিজটি পর্যালোচনা করা যুক্তিযুক্ত। সিবিআইয়ের দাবি বিচারাধীন মামলা নিয়ে তৈরি এই ডকু-সিরিজ বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই ‘যতদিন তদন্ত চলছে, ততদিন পর্যন্ত এই সিরিজ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক।’
আদালতের অন্তর্বতীকালীন নির্দেশ মেনে নিয়েছে নেটফ্লিক্স। তাঁদের তরফে আদালতকে জানানো হয়, পরবর্তী শুনানি - ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিরিজটি প্রচারিত হবে না।
বৃহস্পতিবার শুনানির সময় সিবিআই জোর দিয়ে বলেছে যে সিরিজটিতে অভিযুক্ত এবং মামলার কয়েকজন সাক্ষীর সাক্ষাত্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী শ্রীরাম শিরসাত যুক্তি দেন, যেহেতু সিবিআই শুধুমাত্র ট্রেলার দেখেছে, তাই সিরিজে কতজন সাক্ষীকে দেখানো হয়েছে তা তারা জানে না। হাইকোর্ট নেটফ্লিক্সকে অনুরোধ করে, সাক্ষাৎকার নেওয়া সাক্ষীদের সঠিক সংখ্যা জানাতে।
নেটফ্লিক্সের তরফে সিনিয়র অ্যাডভোকেট রবি কদম আদালতকে সওয়াল-জবাবের সময় জানান, এই সিরিজে ইন্দ্রাণীর ছেলে মিখায়েল এবং তাঁর মেয়ে বিধি মুখোপাধ্যায়-সহ পাঁচ জন সাক্ষীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পাঁচজন সাক্ষীর মধ্যে দু'জনের জেরা শেষ হয়েছে, তিনজনের জেরা এখনও বাকি রয়েছে। এরপরই আদালত প্রস্তাব দেয়, এই মামলা এগোনোর আগে নেটফ্লিক্সের তরফে যেন সিরিজটি সিবিআই আধিকারিকদের সামনে প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে, কদম আদালতের পরামর্শের বিরোধিতা করেছিলেন নেটফ্লিক্সের আইনজীবী, তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি প্রাক-সেন্সরশিপের সমান। পরে অবশ্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল দেবাং ব্যাস-সহ বাছাই করা সিবিআই আধিকারিক ও আইনজীবীদের জন্য সিরিজটি দেখাতে রাজি হয় নেটফ্লিক্স কর্তৃপক্ষ। এবং পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত সিরিজটির সম্প্রচার পিছিয়ে দিতে রাজি হয়েছে নেটফ্লিক্স।
২০১২ সালের ২৫ এপ্রিল গাড়ির মধ্যে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল শিনা বোরাকে। স্বামী (সেইসময় বর্তমান, এখন ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে) পিটার মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খান্না ও গাড়ির চালক শ্যামবর রাইয়ের সহায়তায় মেয়ে শিনাকে খুন করেন ইন্দ্রাণী অভিযোগ এমনটাই।
ইন্দ্রানী ও তাঁর প্রথম স্বামী সিদ্ধার্থ দাসের মেয়ে শিনা। যদিও ইন্দ্রাণী শিনাকে নিজের বোন হিসাবে বিভিন্ন জায়গায় পরিচয় দিতেন। তবে ইন্দ্রাণী তৃতীয় স্বামী পিটার মুখোপাধ্য়ায়ের ছেলে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শিনার সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি মা ইন্দ্রাণী। এনিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরপরই শিনাকে খুন করে, পুড়িয়ে, পুঁতে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তবে ইন্দ্রাণী বার বারই দাবি করেছেন শিনা বিদেশে পড়াশোনা করে। সে বেঁচে আছে। এখানেই শেষ নেয়, বরখা দত্তকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইন্দ্রানী বলেন, নাবালিকা অবস্থায় নিজের বাবার হাতে ধর্ষিতা হন তিনি। এবং সেই ধর্ষণের ফলেই জন্ম হয় শিনার।