সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার খবর সামনে আসবার পর থেকে প্রয়াত অভিনেতার একাধির পুরোনো প্রজেক্ট বন্ধ হওয়া বা তাঁর জায়গায় অন্য কারুর সেই ছবিতে কাজ করবার কথা প্রকাশ্যে আসছে। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় লেখক চেতন ভগতের একটি পুরোনো টুইট। যেখানে হাফ গার্লফ্রেন্ডের হিরো হিসাবে সুশান্তের নাম ঘোষণা করতে দেখা গেছে চেতনকে। যদিও বাস্তবে চেতন ভগতের লেখা হাফ গার্লফ্রেন্ড উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি একই নামের ছবিতে লিড রোলে দেখা গেছে অর্জুন কাপুরকে।
৭ নভেম্বর,২০১৫ তারিখে পোস্ট করা এই টুইটে চেতন ভগত লেখেন, আমি এই খবরটা ভাগ করে নিতে পেরে দারুণ খুশি যে মোহিত সুরি পরিচালিত হাফ গার্লফ্রেন্ড ছবিতে লিড রোলে অভিনয় করবেন সুশান্ত সিং রাজপুত। শ্যুটিং শুরু হবে ২০১৬-র প্রথমার্ধে।
চেতন ভগতের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি ছবি ‘কাই পো ছে’র সঙ্গেই রুপোলি সফর শুরু করেছিলেন সুশান্ত। যদিও অভিনেতা নিজের মুখেই জানিয়েছিলেন হাফ গার্লফ্রেন্ড থেকে
ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন সুশান্ত। ১৪ই জুন বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে আত্মহত্যা করেন অভিনেতা। এই ঘটনার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নেপোটিজম বিতর্ক চরমে। সুশান্তের জায়গায় ‘স্টারকিড’ অর্জুন কাপুরের এই ছবিতে অভিনয় করা নিয়েও সরব হন অনেকেই। কিন্তু ২০১৬ সালে বলিউড লাইফকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে হাফ গার্লফ্রেন্ড থেকে সরে দাঁড়ানোর আসল কারণ জানিয়েছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। তাঁর কথায়, ডেট সমস্যার কারণেই এই প্রজেক্ট ছাড়তে হয় তাঁকে।
দীনেশ বিজয়নের রাবতার জন্যই কী হাফ গার্লফ্রেন্ড থেকে সরে দাঁড়ান সুশান্ত? জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘দেখুন আমি অনেক ছবিতেই অভিনয় করছিলাম, সেগুলো সবই এখন রিলিজ করছে। আমি সেগুলোর নাম বলতে চাই না। বিষয়টা হল, যখন আমি কাউকে কথা দিয়েছি এবং সে কোনও প্রজেক্ট শুরু করতে দেরি করছে (এমনটা নয় ইচ্ছাকৃত করছে) আমাকে সেটা বুঝতে হবে। সেটা যত বড় ছবি বা বড় প্রযোজনা সংস্থা হোক কিংবা ছোট ছবি হোক,আমি অন্য ছবির জন্য সেটা ছাড়তে পারব না। তাই দুর্ভাগ্যবশত, দুটো ছবির জন্য যেটা আমি করছিলাম এবং সেটা শেষমেশ তৈরি হয়নি,গত একবছরে আমাকে ১২টা ছবি ছাড়তে হয়েছে। একটা ছবি তো হয়নি,অন্যটা আপতত বন্ধ রয়েছে। সেই ছবিগুলো নিয়েই আমরা কথা বলছি আজকাল। এই নিয়ে আর বেশি গভীরে ঢুকে লাভ নেই'।
অভিষেক কাপুরের ফিতুর ছবিতেও অভিনয় করবার কথা ছিল সুশান্তের। তবে সুশান্ত সেই অফার ফেরাতে বাধ্য হন পানির জন্য। যেই প্রজেক্ট প্রায় তিন বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখবার পর বন্ধ করে দেয় যশরাজ ফিল্মস। সত্যি কি আক্ষেপ ছিল এই প্রজেক্ট গুলো হাত থেকে চলে যাওয়ার? সুশান্ত চার বছর আগের সেই সাক্ষাত্কারে বলেন, না আমার কোনও আক্ষেপ নেই। এইভাবেই আমার গোটা জীবনটা আমি কাটিয়ে দেব,যতদিন আমি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। আমি তোমাকে কথা দিয়েছি মানে আমি তোমার সঙ্গে ছাড়ব না এই কারণে যে অন্য ছবিটা বড় ব্যানারে কিংবা সেটার চিত্রনাট্যটা আমার বেশি ভালো লেগেছে।
হাফ গার্লফ্রেন্ডের অফার আসার অনেক আগেই আমি দীনেশ বিজয়নকে হ্যাঁ, বলেছিলাম রাবতার জন্য।এবং অন্য একজনের ভুল বোঝাবুঝির জন্য আমি ভেবেছিলাম দুটো ছবিই আমি করতে পারব। কিন্তু তেমনটা হল না। দুইজন পরিচালকই একই মাসে শ্যুটিং করতে চাইলেন। যেহেতু আমি দীনেশকে আগে কথা দিয়েছিলাম তাই আমাকে মোহিতের ছবি থেকে সরে দাঁড়াতে হয়।
ফিতুরের অফার ফেরানোর জন্য অভিষেক কাপুরের সঙ্গে কী কোনও সমস্যা হয়েছিল? সুশান্ত বলেছিলেন এক্কেবারেই নয়, এই সপ্তাহেই আমাদের একসঙ্গে ডিনারের প্ল্যানিং রয়েছে। একতা কাপুরও (হাফ গার্লফ্রেন্ডের প্রযোজক) আমাকে ফোন করে কথা বলেছেন,জানিয়েছেন সেই তৃতীয় ব্যক্তির তৈরি সমস্যার জন্য তিনি দুঃখিত এবং পরবর্তী সময়ে আমরা একসঙ্গে কাজও করব। আমাদের সঙ্গে ওঁনাদের দুজনের সম্পর্কই খুব স্বাভাবিক'।
প্রসঙ্গত, অভিষেক কাপুরের সঙ্গে ২০১৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কেদারনাথ ছবিতে কাজও করেন সুশান্ত।