এ যেন ঠিক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। বছর চারেক আগে 'পদ্মাবৎ' মুক্তির আগেও ঠিক একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালি। তুমুল বিতর্ক ওঠায় ছবির নাম পাল্টাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এবারেও তাঁর পরিচালনায় ‘গঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি’ একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। তবে মুক্তির মাত্র দু'দিন আগে বনশালি প্রোডাকশনকে নাম পরিবর্তনের পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট!
ছবিটিকে ঘিরে দায়ের হয়েছিল একাধিক মামলা। সমস্ত 'নালিশ' শুনে এদিন আলিয়া ভাট অভিনীত এই ছবির উদ্দেশে এই রায় জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যা শুনে স্বভাবতই বেজায় ফাঁপড়ে পড়েছেন বনশালি। কারণ ইতিমধ্যেই ছবির অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত কিছুদিন আগে। আইনি জটে জড়িয়েছিল ‘গঙ্গুবাই কাথিওয়াড়ি’। হুসেন জাইদির লেখা ‘মাফিয়া কুইনস অফ মুম্বই’ অবলম্বনে তৈরি ‘পদ্মাবত’ পরিচালকের এই ছবি। গঙ্গুবাইের পরিবার আইনি নোটিশ ধরিয়েছিল পরিচালক-প্রযোজক সঞ্জয় লীলা বনশালিকে এবং লেখক হুসেন জাইদিকে। মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। আলিয়ার নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই মামলায়।
গঙ্গুবাইয়ের দত্তক পুত্রের আইনজীবী নরেন্দ্র দুবে হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, ‘কেউই চাইবে তাঁর মা’কে কেউ যৌনকর্মী হিসাবে তুলে ধরুক। একজন যৌনকর্মীর সন্তানও সেটা চাইবে না। শুধুমাত্র টাকার জন্য কারুর চরিত্র হনন করা হচ্ছে। এটা শুধু মা-ছেলের সম্পর্কের বিষয় নয়, এটা প্রত্যেকটা নারীর সম্মানের বিষয়। কোনও মেয়ে চাইবে না এমন নগ্ন ও অশ্লীলভাবে তাঁকে তুলে ধরা হোক। হুসেন জাইদি তাঁর বইতে যা লিখেছেনসেটা যদি আমরা মেনেওনি তাহলেও উনি বলেছেন গঙ্গুবাই কোনওদিন চাননি যৌনকর্মী হতে। তাহলে কেন তাঁকে ওইভাবে প্রদর্শিত করা হবে। উনি একজন সমাজকর্মী ছিলেন। মোরারজি দেশাই, জহরলাল নেহেরু থেকে অটল বিহারী বাজপেয়ী ওঁনার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন নির্বাচনের সময়। কারণ তিনি কামাঠিপুরার কর্ত্রী ছিলেন। উনি যৌনকর্মীদের অধিকারের লড়াই লড়েছেন।
বম্বে হাইকোর্টে এই ছবির বিরুদ্ধে মামলা করেন কামাঠিপুরা অঞ্চলের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, গোটা কামাঠিপুরা অঞ্চলকে ছবিতে যেভাবে যৌনপল্লী হিসেবে দেখানো হয়েছে তা একেবারে ঠিক নয়। কামাঠিপুরার এম এল এ আমিন প্যাটেল এবং শ্রদ্ধা সার্ভে দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন।এদিন অব্যশই ওই দু'টি মামলায় খারিজ করেছে বম্বে হাইকোর্ট। তাই ছবির মুক্তির ব্যাপারে আর কোনও বাধা রইল না বলেই মনে করা হচ্ছে।