সাংসদ হওয়ার পর থেকেই নেটিজেনের কড়া নজরের আওয়াত থাকেন বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান। যেহেতু তিনি এখন আর শুধু নায়িকা নন একজন জনপ্রতিনিধিও,তাই তার বিনোদনমূলক ভিডিয়ো নিয়েও অনেক সময়ই কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে নুসরত জাহানকে। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে টলিগঞ্জের দুই নায়িকা নুসরত জাহান ও মিমি চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নানা রকম প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদেরকে। বিরোধী দলের তরফে নানা সময়ে উড়ে এসেছে কটাক্ষ, আর অনেক ক্ষেত্রেই নুসরত জাহানকে ঘিরে তৈরি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে টিকটক।
সোমবারই টিকটক সহ ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার।ভারতের সার্বভৌমত্ত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা ভঙ্গ করার অভিযোগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দাবি মোদী সরকারে। যদিও মোদী সরকারের টিকটক নিষিদ্ধ করবার সিদ্ধান্ত নুসরতের কাছে হঠকারি সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়েছে। বুধবার এই তারকা সাংসদের মতে,'জাতীয় সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছি তবে কয়েক হাজার মানুষ যে কর্মহীন হয়ে পড়লেন সেই বিষয়টি কে দেখবে?' এরপর থেকেই তোলপাড়া রাজনৈতিক মহল। নুসরতের এই বক্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে নানান রাজনৈতিক তরজা। নুসরত নিজেও টিকটকের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ।
টিকটক ও নুসরত জাহানকে ঘিরে বরাবরই নেট দুনিয়ায় নানা মুনির নানা মত উঠে এসেছে।গত বছর মে মাসে নুসরত-মিমি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁদের একটি টিকটক ভিডিয়ো টুইটারে শেয়ার করে পরিচালক রাম গোপাল বর্মা লিখেছিলেন,'দারুণ, বাংলার নতুন সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ও নুসরত জাহান। দেশ সত্যিই এগোচ্ছে। নতুন এই সাংসদদের চোখে দেখেও শান্তি'।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে যখন সিএএ আইন নিয়ে দেশ জুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। এমনকি নাগরিক সংশোধনী আইন নিয়ে জ্বলছে বসিরহাটও,তখন নুসরতের একটি টিকটক ভিডিয়ো পোস্ট করা নিয়ে বিতর্কের ঝড় বয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেন সাংসদীয় এলাকায় মন না দিয়ে টিকটকে ইয়াদ পিয়া কি গানে ঠোঁট নাড়ছেন নুসরত? প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন নেট নাগরিকরা। ভিডিয়োয় কালো ক্রপ টপ ও জিনসে নাচতে দেখা গিয়েছিল নুসরত জাহানকে।
লকডাউনের সময়ও নুসরত জাহানের দুটি টিকটক ভিডিয়ো ঘিরে বিতর্ক দেখা যায়। করোনা সংকটে এপ্রিল মাসে ত্রাণের দাবিতে নুসরতের সংসদীয় এলাকা বসিরহাটের বাদুড়িয়ার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়া অশ্বত্থতলায় ধুন্ধুমার বেঁধে যায়।রীতিমতো জনতা-পুলিশ খন্ডযুদ্ধ চলে। মাথা ফাটে বাদুড়িয়া থানার ওসি বাপ্পা মিত্রের। এই রকম অবস্থায় ক্রপ টপ,হট প্যান্টে ‘সেভেজ’ গানে টিকটক ভিডিয়ো বানাচ্ছেন সাংসদ। এটা অনেক নেটিজেনের চোখেই কুরুচিকর ঠেকেছে। এমনকি সিপিআইএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র টুইট করে পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের তারকা সাংসদকে।
যদিও নুসরত পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি। তিনি বলেন,'শিল্পীর কাজ সবসময় বিনোদনের রসদ জুগিয়ে যাওয়া। হ্যাপি ট্রোলিং, ট্রোলারস'। সঙ্গে আরও একটি টিকটক ভিডিয়ো পোস্ট করেন নুসরত।
এই ভিডিয়োয় জেনিফার লোপেজের চ্যালেঞ্জের তালে তাল মিলিয়ে নাচতে দেখা গিয়েছিল নসুরতকে। নিজের জবাবের সঙ্গে নুসরত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বিতর্ক এড়াতে টিকটক এড়িয়ে যাওয়ার প্রার্থী তিনি নন।২০১৮-র এপ্রিলে টিকটকে যোগ দেন নুসরত জাহান। দু বছরের মধ্যেই তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা ১৪ লক্ষের গন্ডি পার করেছিল। যদিও নায়িকার দাবি অনান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেওর মতো এটিও তাঁর কাছে ফ্যানেদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের একটি মাধ্যম ছিল মাত্র। এটি বন্ধ হয়ে গেলেও ইনস্টাগ্রাম,টুইটারে যোগযোগ বজায় থাকবে কিন্তু সমস্যায় পড়বেন টিকটকের সঙ্গে যাদের রুজিরুটি জড়িয়ে আছে সেই মানুষগুলো।