সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। একদিকে মুম্বই পুলিশ, মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি এটি নিছক আত্মহত্যা। এর মধ্যে ফাউল প্লে'র কোনও সম্ভাবনা নেই। অথচ সেই তত্ত্ব মানতে না-রাজ অনুরাগীরা। এখনও তো পরিবারের তরফেই সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে সুশান্তের আত্মহত্যা বিষয় নিয়ে। তাঁরাও মনে করছেন ‘খুন’ই করা হয়েছে সুশান্তকে। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সুশান্তের মৃত্যুর কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ঝুলে পড়বার কারণে শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু’। এবার সুশান্তের পরিবারের আইনজীবী দাবি করলেন সুশান্তের ময়নাতদন্তের ফাইনাল রিপোর্টে তাঁর মৃত্যুর সময় উল্লেখ করা হয়নি।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বিকাশ সিং জানান, ‘পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট যা আমি দেখেছি সেখানে সময়ের উল্লেখ করা নেই, যা তদন্তের জন্য অত্যন্ত জরুরি। ওঁকে কি মারবার পর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল নাকি ঝুলে পড়বার কারণেই মৃত্যু তা জানতে সময় জানাটা দরকার’।
ময়না তদন্তের রিপোর্টে নির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ করা সম্ভবপর না হলেও একটা সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। যা তদন্তের জন্য খুবই জরুরি।
সুশান্তের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয় ডঃ আরএন কুপার মিউনিসিপ্যাল জেনারাল হাসপাতালে। গত ১৪ই জুন মুম্বইয়ের বান্দ্রার কার্টার রোডের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। সুশান্তের মৃত্যুর দিন ওই আবাসনে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল তবে বেশ কিছু মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। কেন একের বেশি অ্যাম্বুলেস এসেছিল-সেই নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। পাশাপাশি সুশান্তের ওই ফ্ল্যাট থেকে নিকটবর্তী অনেক সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরিষেবা মজুত থাকা সত্ত্বেও কেন কুপার হাসপাতালেই সুসান্তের দেহ নিয়ে যাওয়া হল তা নিয়েও নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন।
আপতত বিহার সরকারের সুপারিশ মেনে কেন্দ্র সরকার এই মা্মলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে। তবে এই মামলায় সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে বিহার পুলিশের জুরিসডিকশন নিয়ে শীর্ষ আদালতে যে পিটিশন দাখিল করেছিলেন রিয়া চক্রবর্তী তার শুনানি শেষ হয়েছে মঙ্গলবার। বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সবপক্ষের তরফেই লিখিত জবাবও জমা দেওয়া হয়েছে।
মুম্বই পুলিশ রাজনৈতিক চাপে পড়ে এই মামলার তদন্তে বাধা দিচ্ছে বলে সর্বোচ্চ আদালতে নালিশ করেছে বিহার সরকার। তাঁদের দাবি বিহার পুলিশের তদন্তে বাধা দিয়েছে মুম্বই পুলিশ, জোর করে কোয়ারেন্টাইনে রাখবার নামে আটকে রাখা হয় এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে মুম্বই পৌঁছানো এসপি বিনয় তিওয়ারিকে। অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফেও সুপ্রিম কোর্টকে জানানো হয়েছে দু মাস পরেও এই মামলা নিয়ে কোনও এফআইআর দায়ের করেনি মুম্বই পুলিশ। অন্যদিকে অপর কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি এই মামলার তদন্ত করছে, তাই আরও একটি কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতেই সুশান্তের মামলা সঁপে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে কেন্দ্র।
শুক্রবার সুশান্তের পরিবারের প্রায় পাঁচ ঘন্টা ধরে বয়ান রেকর্ড করে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসাররা। অন্যদিকে সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত আর্থিক তছরুপের দিকটা খতিয়ে দেখছে ইডি।