তুঙ্গে সোহিনী-কল্য়াণ তরজা! আর জি কর কাণ্ডের মাঝেই শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের কণ্ঠে ‘জাস্টিস অফ কোন্নগর’ ধ্বনি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ‘বিনা চিকিৎসায়’ মারা গিয়েছে কোন্নগরের এক যুবক, এমনটাই অভিযোগ পরিবার এবং শাসক দলের। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অভিনেতা-শিল্পীরা কেন ওই তরুণের মৃত্যুর বিচার চাইছেন না? প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পালটা জবাব দেন সোহিনী সরকার।
সোহিনী স্পষ্ট বলেন, দলীয় ঝাণ্ডা ছাড়া তাঁদের প্রতিবাদ আন্দোলনে যোগ দিন কল্যাণবাবু। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সোহিনী ও তাঁর ননদিনি দীপ্সিতা ধরকে নিয়ে পথে হাঁটতে চাইলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা। সঙ্গে শর্তও বেঁধে দিলেন। সোহিনী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃণমূলের পতাকা ছাড়া আন্দোলনে পা মেলাতে বলেছিলেন। রবিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে তৃণমূল সাংসদ জানান, সোহিনীর অভিনয় তাঁর বিশেষ পছন্দের। নেতার কথায়, ‘সোহিনীকে আমার ভাল লাগে। কিন্ত উনি কথা দিন যে ওঁদের কর্মসূচিতে রাজনীতির কোনও স্লোগান বা কথা থাকবে না, আমি রাস্তায় নামতে রাজি আছি। ওই কর্মসূচিতে দলীয় পতাকা ছাড়াই আমি হাঁটব।’
এখানেই থামেননি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর আসনে কল্যাণের বিরুদ্ধে বাম প্রার্থী ছিলেন সোহিনীর ননদ দীপ্সিতা ধর। কল্যাণবাবু বলেন, 'যদি সোহিনী বলেন রাজনীতিকে বাদ দিয়ে বিচারের কথা বলবেন, তাহলে ননদ (দীপ্সিতা ধর) এবং বৌদি (সোহিনী) দু’জনকে দু’পাশে নিয়ে আমি মিছিলে হাঁটতে রাজি আছি।’ সম্পর্কে শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের মাসতুতো বোন দীপ্সিতা।
এদিন সোহিনীকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘ওঁর নতুন স্বামীই (শোভন) তো বলেছেন পশ্চিমবঙ্গ দখল করবেন। অভিনেত্রী আগে তাঁর ঘর সামলান।’ আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ময়দানে নেমেছেন শোভনও। দু-দিন আগেই ফেসবুকে শোভন লেখেন, ‘পরবর্তী শুনানিতে যদি কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে বাংলার মেয়েরা, মায়েরা শুধু রাত দখল আর নবান্ন দখল নয়, পুরো পশ্চিমবঙ্গ দখল করবে।’ সেই প্রসঙ্গেই সোহিনীকে ঘর সামলানোর পরামর্শ কল্যাণের।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ কথা, আরজি করের চিকিৎসক তরুণীর যেমন বিচার দরকার, তেমনই ২২ বছরের বিক্রম ভট্টাচার্যেরও বিচার চাই। কল্যাণ আগেই টলিউডকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন- 'মফস্সলের মানুষ বলে ছেলেটার (মৃত বিক্রম) জন্য আওয়াজ তোলার কেউ থাকবে না? তাঁর জন্য এলিট ক্লাস নামবে না? তার জন্য কোন গায়ক-গায়িকা, ফিল্ম আর্টিস্টরা নামবেন না?’
এই খোঁচার জবাবেই সোহিনী জানিয়েছিলেন, 'উনিও পতাকা ছেড়ে প্রতিবাদ মিছিলে নামুন না। আমরা তো কোনও একজনের জন্য বিচার চাইছি না। আমাদের সিস্টেমের মধ্যে যে কোরাপশন আছে, সিস্টেমের মধ্যে যে গাফিলতি আছে তার বিরুদ্ধে গলা চড়িয়েছি।’