ভোট যত এগিয়ে আসছে, বিভিন্ন দলের নেতারা ততই একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করে চলেছেন। এই তালিকায় একেবারেই নতুন নাম নয় চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। ভোটের দামামা বাজার শুরু থেকেই তাঁকে ঘিরে বা তাঁর মন্তব্য নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ বার নারী পোশাক নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে তিনি। পোশাক নিয়ে মহিলাদের সচেতন থাকার কথা বলার পাপাশি, কোথায় কী পোশাক পরতে হবে, তাই নিয়ে মন্তব্য করেছেন ইভিনেতা বিধায়ক। সেই নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
কিছু দিন আগে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিং রাওয়াতের মেয়েদের ছেঁড়া জিনস পরা এবং ছোট পোশাক পরে হাঁটু দেখানোর মন্তব্য নিয়ে তীব্র জলঘোলা হয়েছে। এই নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে মেয়েদের কোথায়, কেমন পোশাক পরা উচিত, সেই শিক্ষা দিতে গিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। আট বছর আগে অভিনেতা এবং তৃণমূল বিধায়ক মন্তব্য করেছিলেন, মহিলাদের ছোট পোশাক ‘ধর্ষণ’ এবং ‘ইভটিজিং’-এর মতো ঘটনায় ইন্ধন জোগায়। এই নিয়ে সেই সময়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছি। প্রশ্ন উঠেছিল, বিধায়ক হিসেবে নিজের আসল দায়িত্ব পালন না করে, মেয়েদের ড্রেসকোড বেঁধে দেওয়ার স্পর্ধা তিনি কী ভাবে দেখাতে পারেন? শুক্রবার তাঁর কেন্দ্র বারাসতে নির্বাচনী প্রচারে চিরঞ্জতকে এই প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এত বছর কি সেই জায়গা থেকে তিনি সরে এসেছেন? এর জবাবেই অভিনেতা বলেন, ‘ড্রেসকোড বেঁধে দিইনি। শুধু পরামর্শ দিয়েছিলাম। আজও একই কথা বলব। আমার মনে হয়, জায়গা বুঝে পোশাক বাছাই করা অত্যন্ত প্রয়োজন। ডিস্কোতে যাওয়ার পোশাক আর ভিড় ট্রেনে ওঠার পোশাক এক নয়। আবার শ্রাদ্ধ বাড়িতে যাওয়ার পোশাক আলাদা। মহিলাদের পোশাক সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত।’
তাঁর এই মন্তব্যে বিরোধীরা হাতিয়ার পেয়ে গিয়েছে। অনেকেই দারি করেছেন, তীরথ সিং রাওয়াতের মানসিকতার সঙ্গে চিরঞ্জিতের মানসিকতার কোনও পার্থক্য নেই। বারাসতের বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী ফরোয়ার্ড ব্লকের সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এর তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ‘মানুষ একবার ভুল করতে পারে। কিন্তু কেউ যদি বার বার একই ভাবে মেয়েদের ছোট করেন, তবে সেটাকে ভুল বলা যায় না। বরং তিনি এ ভাবে নিজের জঘন্য মানসিকতারF পরিচয় দেন।’ এই নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিজেপি নেতা প্রতীক চৌধুরীও। যদিও তাঁর দলের বেশির ভাগ নেতা-মন্ত্রীরাই এমন মানসিকতাই পোষণ করেন। প্রতীক চৌধুরী বলেছেন, ‘চিরঞ্জিত বিধায়ক হওয়ার পরেই বারাসতও ধর্ষণনগরী হয়ে গিয়েছে। পোশাকের জন্যই মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হন, এ কথা তিনি আগেও বলেছেন । এর উত্তর ভোটবক্সে দেবে সাধারণ মানুষ।‘ যাই হোক বিধানসভা ভোটের আগে মেয়েদের পোশাক এখন চর্চার বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।