বৃহস্পতিবার ঘাটালের সাংসদ দেবের প্রচেষ্টায় নিরাপদে ঘরে ফিরেছিল নেপালে আটকে পড়া বাংলার ৩৬ জন শ্রমিক। সেইসময়ই দেব আশ্বাস দিয়েছিলেন নেপালে আটক পশ্চিমবঙ্গের অনান্য শ্রমিকদেরও ঘরে ফেরানোর সবরকম প্রচেষ্টা চলছে। কথা রাখলেন দেব। তাঁর চেষ্টায় শনিবার রাতে নেপাল থেকে ঘাটাল ফিরলেন আরও ২৪৭ জন পরিযায়ী। এদের জন্য ৭টি স্টেট বাসের ব্যবস্থা করেছিলেন দেব। শনিবার দার্লিজিং জেলার পানিট্যাঙ্কি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন এই পরিযায়ীরা। সকলের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে নেপালে বাংলার শ্রমিকরা আটকে রয়েছেন এই খবর আমাজন অভিযান তারকার কানে পৌঁছানো মাত্র তিনি দার্লিজিংয়ের জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । তবে সীমান্ত পার করতে গেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতি লাগবে,সেকথা দেবকে জানিয়ে দেন জেলাশাসক।এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে,কেন্দ্রীয় স্বরা্ষ্ট্র দফরতের থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নেন ঘাটালের সাংসদ।
পরিযায়ীদের ঘরে ফেরানোর ব্যাপারে দেবের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দুদিন আগেই টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন দেব। তিনি লেখেন, ধন্যবাদ আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে,এবং অন্য সকল সরকারি আধিকারকিদের যাঁরা আমাকে সাহায্য করেছেন নেপাল সীমান্ত থেকে স্বর্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ওই পরিযায়ীদের ঘাটাল ফিরিয়ে আনতে।
সকলকে উদ্ধার করা সহজ ছিল না,কিন্তু আমরা সফল হয়েছি তাঁদের কাছে পৌঁছতে এবং নিরাপদে সকলকে নিজের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে'।
জানা গিয়েছে নেপালে বাংলার প্রায় এক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এই করোনা সংকটের আবহে আটকে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় তিনশো জনকে ইতিমধ্যেই ঘরে ফিরিয়েছেন দেব। বাকিদেরও দ্রুতই ঘরে ফেরানোর জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও জম্মুতে আটকে থাকা বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরাও বাড়ি ফিরতে চেয়ে দারস্থ হয়েছেন ঘাটালের সাংসদের। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন দেব। শুক্রবার রাতে সূদূর দুবাই থেকে ঘরে ফেরার আবেদন জানিয়ে দেবের স্মরণাপন্ন হয়েছেন বাংলার একদল শ্রমিক।
অন্যদিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরাবস্থা ও তাঁদের মৃত্যু নিয়ে ভারতীয় সেলেব্রিটিদের মৌনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন দেব। শুক্রবার রাতে ফেসবুকের দেওয়ালে একটি বিস্ফোরক পোস্ট করলেন তিনি। যেখানে দেব প্রশ্ন করেন ‘পরিযায়ীদের জীবনের কোনও দাম নেই?’
ফেসবুকের দেওয়ালে দেব লেখেন, আজ আমি দেখছি কত ভারতীয় তারকা #BlackLivesMatter বলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন,এমনকী কেরলের অন্তঃসত্ত্বা হাতির মৃত্যু নিয়েও কত আন্দোলন। দুটো বিষয়ের প্রতি আমার পূর্ন শ্রদ্ধা এবং সমর্থন রয়েছে সত্যি বলতে।
কিন্তু কেন এঁদের একজনও প্রতিবাদের এক লাইনও লিখল না অথবা কোনও হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করল না যখন এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে মাইলের পর মাইল পরিযায়ী শ্রমিকদের হাঁটতে দেখল? এই গরমের মধ্যে! রোদে পুড়ে পায়ের চামড়া উঠে গেছে, পায়ে প্লাস্টিকের বোতল জড়িয়ে হাঁটছে পরিযায়ীরা,তবুও প্রতিবাদ কই? ট্রেনের লাইনে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেলে তাঁদের দেহ, প্রতিবাদ?
গুরুত্বপূর্ন নয়? তাঁদের জীবনের কোনও দাম নেই?
'মঙ্গলকামানায় পোস্ট' করা অনেক সোজ কিন্তু আমরা যে সিস্টেমের অংশ সেটাকে প্রশ্ন করা সহজ নয়। দান-ধ্যান তো বাড়ি থেকেই শুরু হয় তাই না? কারুর সেকথা মনে আছে?
বেশ বাছাই করা কিংবা সুবিধাজনক প্রতিবাদ'।