উৎসবে ফেরার ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদির দেখানো পথে হেঁটেই শুক্রবার চুঁচুড়ায় ৩৯তম শারদীয়া তাঁত বস্ত্রমেলার উদ্বোধন করলেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মেলা ঘুরে নিজের জন্য এবং বন্ধুদের জন্য তাঁতের কুর্তি-শাড়ি কিনলেন রচনা। পুজোর শপিং শুরু করলেন পুরোদমে। একইসঙ্গে মমতার সুরে সুর মিলিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের হাত জোড় করে কাজে ফেরার অনুরোধ জানালেন।
রচনা স্পষ্ট করেন, আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের বিচার তিনিও চান, তবে সেই বিচার তৃণমূল দেবে না। দেবে সিবিআই। আরজি করের ঘটনা নিয়ে গত ১৫ অগস্ট একটি ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে তুমুল ট্রোলড হয়েছিলেন রচনা। সেই ঘটনায় নেটিজেনদের একাংশকে একহাত নিয়েছিলেন তৃণমূলের তারকা সাংসদ। তবে ঘটনার এক মাস পরেও আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে থামছে না। আরজি করের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে স্বাস্থ্যভবনের সামনে আন্দোলনে বসেছেন জুনিয়র চিকৎসকরা।
তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভের পর ৭২ ঘণ্টা অতিক্রান্ত। বৃহস্পতিবার ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল নবান্ন পর্যন্ত গেলেও শেষমেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। কারণ লাইভ স্ট্রিমিং-এ রাজি হয়নি রাজ্য সরকার, অবস্থানে অনড় থেকেছে চিকিৎসরা। সেই প্রসঙ্গে রচনা জানান, তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের বিচার চাওয়ার লড়াইয়ে বাকি সব মানুষের মতো তিনি পাশে রয়েছেন। কারণ দোষীরা শাস্তি পাক সে সকলের কাম্য। দিদি নম্বর ১ স্পষ্ট জানান, 'শুধু আমি নই, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পাশে আছেন। কিন্তু চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জন্য অনেক মানুষ দুঃখ পাচ্ছেন, কষ্ট পাচ্ছেন। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছেন। অনেক তিলোত্তমা তৈরি হচ্ছে। অনেক অভয়া তৈরি হচ্ছে। অনেক বাচ্চার মা-বাবা মারা যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে আমার করজোড়ে আবেদন— আন্দোলন থাকবে। আন্দোলন করুন। কিন্তু কাজে ফিরে আসুন।’ প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, এর জন্য মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে মমতা সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী গোটা বাংলার অভিভাবক। তিনি যা বলেন, তা অত্যন্ত ভেবে-চিন্তে বলেন, এমনটাই মত রচনার। তিনিও হুগলিবাসীকে পুজোমুখী হওয়ার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘উৎসব মানে শুধু পুজোর প্যান্ডেল বা প্রতিমা দেখা নয়। প্রচুর মানুষের রুজিরোজগার জড়িয়ে রয়েছে পুজোর সঙ্গে’। মুখ্যমন্ত্রীর ‘উৎসবে ফিরুন’ বার্তাকে সমর্থন জানিয়ে রচনা বলেন, ‘আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে মনে করি, দিদি (মমতা) যা বলেন, চিন্তাভাবনা করেই বলেন। পুজো নিশ্চয়ই হওয়া দরকার। শুধু আনন্দ নয়, প্রচুর মানুষের ব্যথাবেদনা, শ্রম জড়িয়ে থাকে পুজোর সঙ্গে। যাঁরা মণ্ডপ নির্মাণ করেন, তাঁরা কত শ্রম দিয়ে সেই কাজ করেন! উৎসব এলে অনেক মানুষের রুজিরোজগার হয়। সংসার চলে। সেটা ভুলে গেলে হবে না।’