লাইট,ক্যামেরা, অ্যাকশন থেকে সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর উত্থান বিদ্যুৎ গতিতে। আরজি কর ইস্যুতে শুরু থেকেই মমতার সুরে সুর মিলিয়েছেন যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষ। জোর গলায় সায়নী বলেছেন, ‘আরজি করের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি যদি কেউ বিচার চান তার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’।
প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদেরও। এবার সায়নীর নিশানায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আরজি কর ইস্যুতে সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো বার্তা দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে নাম না করেই মমতাকে ‘লেডি ম্যাকবেথ’ বলে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল। একইসঙ্গে সরাসরি বলেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক ভাবে বয়কট করব।’ এই নিয়ে ফের উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি।
দিদির অপমানের জবাবে আগেই মুখ খুলেছে তৃণমূল। এবার ময়দানে সায়নী ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে ‘বোস’কে সরাসরি ‘হেনস্থাকারী’ বলে তোপ দাগলেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি লেখেন, ‘আমি গর্বিত যে হেনস্থাকারী বোস, যিনি উপ রাষ্ট্রপতি হওয়ার স্বপ্নকে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে, তিনি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে সামাজিকভাবে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দিদি এবার সুরক্ষিত!’
সায়নী মনে করান, ‘উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রথম রাজ্যপালকে বয়কট করেছেন এবং ওঁনার বাড়ি যেটা আদতে বিজেপির পার্টি অফিস, যেহেতু নারী সুরক্ষা এবং বিজেপি দুই মেরুতে অবস্থান করে প্রকৃতিগতভাবে!’
প্রসঙ্গত, গত ২ মে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন রাজভবনের অস্থায়ী এক মহিলা কর্মী। ওই দাবির কোনও সারবত্তা নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় রাজভবন। সেই ইস্যুকে কেন্দ্র করে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত চরমে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল বলেন, 'আমি সংকল্প নিচ্ছি যে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিকভাবে বয়কট করব। আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও প্রকাশ্য মঞ্চে থাকব না। আমি এমন কোনও প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে থাকব না যেখানে মুখ্যমন্ত্রী হাজির রয়েছেন। রাজ্যপাল হিসাবে আমার ভূমিকা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এর থেকে কমও না বেশিও না।’
মঙ্গলবার দুপুর থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এরপর ৭২ ঘণ্টা পার হলেও মেলেনি সমাধান সূত্র। সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য দফায় দফায় ইমেল চালাচালি হলেও, সদর্থক কিছুই এখনও হয়নি। এমনকী বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের জন্য নবান্ন পর্যন্ত গিয়েও খালি হাতেই ফিরলেন ডাক্তাররা। কারণ লাইভ সম্প্রচার করে বৈঠকে রাজি নয় রাজ্য সরকার। অবস্থানে অনড় থেকেছে বিক্ষোভকারী চিকিৎসকরা।
শুক্রবার ভারী বৃষ্টি মাথায় নিয়েও স্বাস্থ্যভবনের সামনে বিক্ষোভে অটল জুনিয়র ডাক্তাররা। বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল বোস গোটা পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দুষে বলেন, ‘আমার মতে, সমাজের ও নির্যাতিতার বাবা-মায়ের ভাবাবেগকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সত্যিটা মুছে ফেলতে পারে না। আপনি কাউকে কাউকে কখনও কখনও বোকা বানাতে পারেন, কিন্তু সবাইকে সবসময় বোকা বানাতে পারবেন না।’