ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে হিন্দি টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় এবং পুরোনো শো ‘তারক মেহতা কা উলটা চশমা’। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দর্শকদের বিনোদনের রসদ জুগিয়ে আসছে এই সিটকম। কিন্তু বিতর্ক যেন বেড়েই চলেছে ‘তারক মেহতা’ পরিবারকে ঘিরে। শো-এর প্রযোজক অসিত কুমার মোদী ফের জড়ালেন আইনি ঝামেলায়। টাকা না দেওয়ার অভিযোগ এনে অসিতের বিরুদ্ধে আগেই পুলিশে মামলা ঠুকেছিলেন ‘প্রাক্তন তারকা মেহতা’ শৈলেশ লোধা, এবার ধারাবাহিকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনলেন প্রযোজকের বিরুদ্ধে।
ই-টাইমসকে দেওয়া বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারে প্রযোজকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনলেন পর্দার ‘মিসেস রোশন সোধি’। এই ভূমিকায় ১৫ বছর ধরে অভিনয় করে আসছিলেন জেনিফার মিস্ত্রি বনসিওয়াল (Jennifer Mistry Bansiwal)। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, গত ৬ই মার্চ শেষবার তারক মেহতার শ্যুটিং করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘হ্যাঁ, আমি শো ছেড়ে দিয়েছি। চলতি বছর ৬ই মার্চ আমি শেষবার শ্যুটিং করি। আমি বাধ্য় হই সেট ছেড়ে বেরিয়ে আসতে সোহেল রমানি (প্রোজেক্ট হেড, তারক মেহতা) এবং এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার যতীন বজাজের হাতে চরম অপমানিত হয়ে, আমাকে অপদস্থ করা হয়েছিল’।
অভিনেত্রীর কথায়, তারক মেহতা কা উলটা চশমার সেট পুরোপুরি ভাবে ‘পুং শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী’ লোকজনে ভরপুর। জেনিফার বলেন, ‘শেষদিন আমি যেদিন শ্যুট করি, ওটা ছিল হোলির আগের দিন এবং আমার বিবাহবার্ষিকী। অনেক আগে থেকে আমি অর্ধেক দিনের ছুটি চেয়ে রেখেছিলাম। এটাও বলেছিলাম অন্তত ২ ঘন্টার জন্য আমাকে ব্রেক দিতে। সব পুরুষ অভিনেতাদের মনমর্জি মতো ছুটি দেওয়া হল কিন্তু আমার অনুরোধ সত্ত্বেও আমাকে ছাড়ল না। আমি প্রতিবাদ জানাতে সোহেল আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে, চারবার চিৎকার করে বলে-- ‘বেরিয়ে যাও’। এরপর যতীন আমার গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করে, সব সিসিটিভি-তে রেকর্ড হয়েছে'। এরপরই শো ছাড়ার সিদ্ধান্ত অভিনেত্রী। পরে নির্মাতাদের থেকে নোটিশ হাতে পান অভিনেত্রী। যে তিনি শ্যুটিং আচমকা ছাড়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্চে তাঁদের। যদিও অভিনেত্রী স্পষ্ট জানান, ‘কর্মক্ষেত্র যৌন হেনস্থার শিকার আমি, তাই কাজ করব না’। এরপর প্রযোজকরা অভিযোগ তোলেন তিনি টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া চেষ্টা করছেন। শেষমেষ আমি আইনের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিই। গত ৮ই এপ্রিল আমি অসিত মোদী, সোহেল রামানি এবং যতীন বজাজকে নোটিশ পাঠাই'।
জেনিফারের অভিযোগ, অতীতে বহুবার জেনিফারকে যৌন ইঙ্গিত করেছেন প্রযোজক অসিত মোদী, তবে কাজ হারানোর ভয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। তবে আর নয়। জেনিফার বলেন, ‘এনাফ ইজ এনাফ, আর এই নোংরামো নেওয়া যাচ্ছে না’। যদিও নির্মাতার এই অভিযোগ স্পষ্ট উড়িয়ে দিয়েছেন। সোহেল রমানি জানান, ‘আমরা জেনিফারের চুক্তি বাতিল করেছি। তিন মাস ধরে কাজ খুঁজে না পেয়ে মনগড়া কাহিনি ফাঁদছে। ওর অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন, আসলে ও হঠাৎ করেই মরিয়া হয়ে উঠেছে’।