আরজি করের অভয়ার মৃত্যুতে পথে নেমেছিলেন বিনোদন জগতের তারকারা। তবে এরপরই টলিউডের মধ্যে থেকে একাধিক অভিযোগ উঠে আসছে। মহিলাদের অশ্লীল প্রস্তাব, যৌন হয়রানি-সহ একাধিক খবরে উত্তাল টলিপাড়া। প্রকাশ্যে বহু অভিনেত্রী মুখ খুলেছেন তা নিয়ে। অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী তো খোলা চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এবার অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত ফাঁস করলেন, কীভাবে কাস্টিং কাউচ চলে টলিগঞ্জে। তাঁর দাবি, শুধু পুরুষরা নয়, কিছু মহিলাও জড়িত থাকে গোটা ঘটনার সঙ্গে।
দেবলীনা একবাখ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন যে টলিউডে কাস্টিং কাউচ বর্তমান। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ গণকনভেনশনে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করলেন তিনি। গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের ঝাঁ চকচকে দুনিয়ার পিছনে কী কী ঘটে তা আনলেন সামনে।
‘আমি প্রথম থেকে বলে আসছি বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে মেয়েদের হেনস্থা করা হয়। রয়েছে কাস্টিং কাউচ। আমার এই মন্তব্য নিয়ে হয়তো বিতর্ক তৈরি হবে, কিন্তু আমি তাও বলব, অনেক মহিলাই এই কাস্টিং কাউচের সঙ্গে যুক্ত। বহু নতুন আসা মেয়েকে, মানসিকভাবে এত অত্যাচার করা হয় যে, তারা শেষে গিয়ে বাধ্য হয় কাস্টিং কাউচের অংশ হতে। বহু নতুন নায়িকাকে এটির মুখোমুখি হতে দেখেছি। তবে এটা শুধু বাংলা নয়, প্রতিটা জায়গাতেই রয়েছে।’, বলেন দেবলীনা।
বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও যৌন হেনস্থা নিয়ে সম্প্রতি সরব হয়েছেন ঋতাভরী চক্রবর্তী। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি লেখেন। সেখেন 'মিষ্টি মোড়কে যৌনপল্লি' বলে উল্লেখ করেন টলিপাড়াকে।
তিনি আর তাতে তিনি সমর্থন পেয়েছে রূপাঞ্জনা মিত্র, অনীক দত্ত, সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকের। আর তাই নড়েচড়ে বসেছে টলিউড। তিনি লিখেছিলেন, 'হেমা কমিটির রিপোর্ট মালায়লাম ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটা যৌন নিগ্রহের কথা ফাঁস করেছে। আর সেটা দেখেই আমার মনে হচ্ছে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি কেন এমন ভাবে একই পদক্ষেপ নিচ্ছে না? অনেক রিপোর্ট দেখা যায়, এমনকি আমি এমন অনেক অভিনেত্রীকে চিনি যাঁরা এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন। যে নায়ক, প্রযোজক, পরিচালকদের মনে নোংরা ভাবনা চিন্তা ঘোরে, জঘন্য আচরণ করে কোনও রকম বাধা, সাজা ছাড়াই তাঁদেরকেও আরজি করের নির্যাতিতার জন্য পথে নামতে দেখেছি মোমবাতি হাতে ধরে। তাঁরা কিন্তু আদতে মহিলাদের রক্ত মাংসের দেহ ছাড়া কিছুই ভাবে না।'
ঋতাভরীকে সমর্থন জানিয়েছিলেন রূপাঞ্জনা মিত্র, অনীক দত্ত, সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকের। এবার নারী সুরক্ষা নিয়ে 'উইমেনস ফোরাম'-এর দাবি জানিয়ে লেখা হয়েছে একটি চিঠি সমস্ত মহিলা সদস্যদের তরফ থেকে। যেটা টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান অরূপ বিশ্বাস, ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস, ইমপার সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত, আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি রঞ্জিত মল্লিকের কাছে পাঠানো হয়েছে।