দু'দিন আগেই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে। তবে এবার নিজেই আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের মাঝে পৌঁছে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হয়ে নয়, দিদি হয়ে এসেছি। হ্যাঁ, আমি পদে মুখ্যমন্ত্রী ঠিকই, তবে আপনাদের কাছে আমি দিদিই। কাল সারারাত ঝড়-জল হয়েছে। আপনারা যখন কষ্ট পেয়েছেন, আমিও সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আমারও কষ্ট হয়েছে। কারণ আপনারা যখন রাস্তায় থাকেন, আপনাদের জন্য আমায়ও কিন্তু পাহারাদার হিসেবে জেগে থাকতে হয়।’
আর আন্দোলনকারীদের মধ্যে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই ফেসবুকের পাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সুর চড়ালেন টলিপাড়ার প্রযোজক রানা সরকার। তিনি কী বলছেন রানা?
এতদিন যেভাবে কথা বলছিলেন, তার থেকে প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে লম্বা পোস্টে রানা লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও আন্দোলনের প্রতি নীতিগত সমর্থন পরিষ্কার হয়ে গেল। সারা দেশে, ইন্দিরা গান্ধীর পর এমন কোন নেতা বা নেত্রীকে দেখা যায়নি যিনি নিজের ego সরিয়ে রেখে গণআন্দোলনের পাশে দাড়ালেন। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় বামফ্রন্ট সরকার এরকম কোন উদ্যোগ নিলে হয়তো TATA কারখানা হয়ে যেত। গণআন্দোলনের সমসাময়িক ট্রেন্ড বিশ্বরাজনীতিতে দিন দিন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।Medical College-এ দুর্নীতি ও বিভিন্ন দুষ্টচক্রকে রুখে দেওয়ার জন্য সব রুগী কল্যাণ সমিতিকে ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আন্দোলনকারীদের জয়। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ আরও একবার তার মানবিক রাজনীতিকে সত্যি প্রমাণিত করে দেওয়ার জন্য। এখন অপেক্ষা আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা কী পদক্ষেপ নেয়।’
যদিও রানা সরকারের কথার সঙ্গে সহমত হতে পারেননি বহু নেটিজেন। একজন লেখেন, ‘প্রমাণ লোপাট করেছে সেটাতো প্রমাণিত। সৎ ইচ্ছা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত না? তাহলে আমাদের রাজ্যের মাথায় এখনো ক্রিমিনাল পুলিশ গুলোই বসে আছে যারা প্রমাণ লোপাট করেছে তারা ক্রিমিনাল বই অন্য কিছু নয়। চাটার আগে একটু এগুলো ভাবুন। যদি সত্যিই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতো তাহলে বুঝতাম উনি চান না পরবর্তীতে এরকম ঘটনা ঘটুক’।
আরও একজন লিখেছেন, ‘আবেগে ভাইস্যেন না স্যর!!! নিজের কথা বলে চলে যাওয়ার মধ্যে একটা স্বৈরাচারী হাবভাব থাকে!!! আলোচনা তে বসতে কোথায় ফাটছে বোঝা যাচ্ছে না!!’ আরও একজন লিখেছেন, ‘চটি রানা, আরও বেশি হালুম হালুম করে চাট চটি।’ কেউ লিখেছেন, ‘একে সদিচ্ছা বলে না....বলে গ্যালারি শো! ডাক্তারবাবুরা ওনাকে বিশ্বাস করেন না....শুকনো প্রতিশ্রুতিতে চিঁড়ে ভিজবে বলে মনে হয় না! ইন্দিরা গান্ধী সদিচ্ছা নিয়ে এসেছিলেন বলে তাঁর সামনে পদত্যাগের দাবি রাখার পর তিনি জেএনইউ-এর চ্যান্সেলর পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন....ঘটনাচক্রে যিনি এই দাবিপত্রটি পাঠ করেছিলেন সেই সীতারাম ইয়েচুরির দেহ এখন দিল্লিতে শায়িত আছে! আর এখানে শুকনো প্রতিশ্রুতি....তাই মুড়ি মুড়কির একদর করবেন না!’
কারোর মন্তব্য, ‘টেট আন্দলোনকারিদের কাছে ও উনি গেছিলেন ২০১৯। এখন ও ওরা টোটো করে ঘুরছে ( সবটাই মানবিক )’। কারোর কথায়, ‘এড্রেস টা বলুন আপনাকেও একটা শিরদরা পাঠিয়ে দেবে নাগরিক সমাজ এর থেকে। খুব দরকার আপনার।’ এমনই অজস্র মন্তব্য উঠে এসেছে।