ছবি: চালচিত্র
অভিনয়ে: টোটা রায়চৌধুরী, অনির্বাণ চক্রবর্তী, শান্তনু মাহেশ্বরী, ইন্দ্রজিৎ বসু, রাইমা সেন, স্বস্তিকা দত্ত, তানিকা বসু।
পরিচালনা: প্রতিম ডি গুপ্ত
রেটিং: ৪.৭/৫
সদ্যই মুক্তি পেয়েছে চালচিত্র। ট্রেলারেই চমক দেখিয়েছিলেন পরিচালক, আর ছবিতে ছক্কা হাঁকিয়ে বল মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন রীতিমত। কেমন হল প্রতিম ডি গুপ্ত পরিচালিত চালচিত্র: দ্য ফ্রেম ফ্যাটাল জানাচ্ছে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
আরও পড়ুন: রাজকে কমার্শিয়াল সিনেমার ‘বাবা’র তকমা রানার! বললেন, 'উনি দিয়েই গেছেন, এবার ওঁকে কিছু ফিরিয়ে দিন'
কী নিয়ে চালচিত্র ছবির গল্প?
শহরের বুকে পরপর খুন হতে থাকে মহিলারা। কেমন মহিলা? অবিবাহিত এবং যাঁদের বিয়ে ভেঙে গিয়েছে। সেই মহিলাদের খুন করে বধূবেশ দিয়ে দেওয়ালে চালচিত্রর মতো আকার দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে যাচ্ছে খুনি। এই কেসের সমাধানে নামে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের ৪ অফিসার কণিষ্ক চট্টোপাধ্যায়, নাসির রহমান, রীতেশ কুমার এবং বিশ্বরূপ অধিকারীকে। এঁরা চারজন চার ধরনের মানুষ, স্বভাব, হাবেভাবে। এই সিরিয়াল কিলিংয়ের সঙ্গে ১২ বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি কেসের দারুণ মিল রয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি সেই দুটো কেস জড়িত একে অন্যের সঙ্গে? আদৌ কি সেই সিরিয়াল কিলার ধরা পড়বে? এই সমস্ত উত্তরই দেবে চালচিত্র।
কেমন হল চালচিত্র?
ভীষণ সুন্দর ভাবে গল্পটা বলেছেন পরিচালক। ঝরঝরে মেদহীন স্ক্রিপ্টে টানটান উত্তেজনা, থ্রিল বিদ্যমান। কেবল খুন, অ্যাকশন নয়। গল্পে রয়েছে মানবিক দিক, সম্পর্কের নানা রূপ, রসায়ন। শেষ দৃশ্যে অপূর্বর বলা মৃত্যু সংক্রান্ত সংলাপ মনে রাখার মতো নয় কেবল, ভাবার মতোও । সবটা মিলিয়েই জমজমাট।
টোটা রায়চৌধুরী আগেও বহুবার পুলিশের চরিত্রে নজর কেড়েছেন, এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। বরং নিজেই যেন নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। শান্তনু মাহেশ্বরীর মধ্যে যে মিষ্টি, চার্মিং ব্যাপার রয়েছে সেটাকে ছবিতেও বজায় রেখেছেন পরিচালক। তাঁর এবং স্বস্তিকা দত্তর জুটি বেশ ভালো লাগল। স্বস্তিকা বা রাইমা সেনের স্ক্রিন টাইম কম হলেও তাঁদের তাঁদের নিজ নিজ চরিত্রে নজর কেড়েছেন।
অনির্বাণ চক্রবর্তী তাঁর পরিণত অভিনয় দিয়ে আবারও মন কাড়লেন। নাসিরের মতো ঠান্ডা মাথার শান্ত স্বভাবের ইজ চরিত্র মনে হয় না তিনি ছাড়া আর কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। ইন্দ্রজিৎ বসুও নিজ চরিত্রে যথাযথ। ছোট্ট চরিত্রে তাক লাগালেন ব্রাত্য বসু।
তবে যাঁর কথা শেষে বলব, তাঁর কথা আলাদা করে না বললেই নয়। তানিকা বসু। কী দুর্দান্ত অভিনয়! কী এক্সপ্রেশন, কী শরীরী ভাষা। পুতুলের চরিত্রটি মনে গেঁথে গেল তাঁরই জন্য। আমার মতে এই ছবির শোস্টপার তিনিই। সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বলিউড-দক্ষিণ নয়, টলিউডও পারে, প্রমাণ করলেন দেব! অ্যাকশন থেকে নাচ-গানে ঠাসা খাদান কেমন হল?
পরিশেষে দেবজ্যোতি মিশ্রর সঙ্গীত পরিচালনা নিয়ে কথা বলতেই হয়। ও যে মানে না মানা গানটি ছবির দৃশ্যপটের সঙ্গে যেভাবে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটা দেখে চোখ ভিজতে বাধ্য। জানি না মানে, ঝাপসা শহর গান দুটোও বেশ। ফলে সবটা মিলিয়ে এই ক্রাইম থ্রিলার যে এক কথায় অনবদ্য সেটা বলাই যায়।