সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর দু-বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত। এখনও নায়কের অকাল মৃত্যুর শোকেপাথর তাঁর ফ্যানেরা। সুশান্তের মৃত্যুর সুবিচার চেয়ে আজও প্রতিদিন সরব হয় তাঁর লাখো লাখো ভক্ত। এর মাজেই মঙ্গলবার আচমকা সুশান্ত ভক্তদের রোষের মুখে ই-কমার্স সাইট ফ্লিপকার্ট। এদিন ভরপর টুটাইরে ফ্লিপকার্টকে (Flipkart) বয়কটের ডাক উঠল। কেন? আসলে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সাইটে সুশান্ত সিং রাজপুতের ছবি প্রিন্ট করা টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে। এতদূর ঠিকই ছিল। তবে ওই টি-শার্টে সুশান্তের ছবির সঙ্গে যে লেখাটি ব্যবহার করা হয়েছে তাতেই আপত্তি ভক্তদের! ছবির নীচে লেখা,‘Depression like drowning’। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, ‘অবসাদ ডুবে যাওয়ার মতো’। এই টি-শার্ট অনেকের কাছেই দৃষ্টিকটূ ঠেকেছে। একজন নেটিজেন লেখেন, ‘একজন মৃত মানুষকে নিয়ে ব্যবসা। আর কত নীচে নামবেন আপনারা? ওঁর পরিবার আছে, তাঁদের আবেগের কথা ভাবা উচিত ছিল। পাপ কখনও বাপকে ছাড়ে না'।
কেউ কেউ এই ঘটনাটিকে পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করে লেখেন, ‘সুশান্ত মোটেই আত্মহত্যা করেনি, ওকে খুন করা হয়েছে’।
অপর একজন লেখেন, ‘আপনাদের লজ্জা লাগা উচিত, এই প্রোডাক্টকে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন নয়তো রেডি থাকুন বয়কট হওয়ার জন্য’।
বয়কটের ডাক উঠতেই নড়েচড়ে বসে ই-কর্মার্স সংস্থাটি। ইতিমধ্যেই ওই প্রোডাক্টটি (টি-শার্ট) সরিয়ে ফেলা হয়েছে ফ্লিপকার্টের ওয়েবসাইট থেকে। সংস্থার এক মুখপাত্র আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানান, ‘মার্কেটপ্লেস প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ফ্লিপকার্ট সারা দেশের উপভোক্তার কাছে পৌঁছে দেয় কোনও বিক্রেতাকে। ‘উপভোক্তাই সর্বোপরি’ এটাই আমাদের দর্শন, যে কোনও প্রোডাক্টের মান, উপযোগিতা এবং সংবেদনশীলতার কথা আমরা সবসময় মাথায় রাখবার চেষ্টা করি। সেইমতোই ওই প্রোডাক্টটি অর্থাৎ টি-শার্টটিকে সংবেদনশীলতার কথা মাথায় রেখে আমরা সরিয়ে দিয়েছি।'
২০২০ সালের ১৪ই জুন অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁর বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে। এই ঘটনাকে ‘আত্মহত্যা’ বলে দাবি করেছিল মুম্বই পুলিশ। অবসাদে ভুগছিলেন অভিনেতা, এর জেরেই আত্মহত্যা, জানিয়েছিল পুলিশ। যদিও এই দাবি মানতে না-রাজ ছিল পরিবার। অভিনেতার গার্লফ্রেন্ড ও রিয়া চক্রবর্তীর নামে সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা দায়ের করেন সুশান্তে বাবা।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এই রহস্যমৃত্যুর তদন্ত ভার পায় সিবিআই। সেই ঘটনার পর প্রায় দু-বছর কেটে গেলেও এখন সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে একটা বাক্যও খরচ করেনি তদন্তকারী সংস্থা। সুশান্ত আত্মহত্যাই করেছিলেন নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ? সেই জবাবও দেয়নি সিবিআই। ‘জাস্টিস ফর সুশান্ত’- এই লড়াই সোশ্যাল মিডিয়ায় আজও জিইয়ে রেখেছে ফ্যানেরা।