তুনিশা শর্মার মৃত্যুর পর থেকে জেলেই রয়েছেন অভিনেতা শীজান খান। তুনিশার মৃত্যু ঘিরে শীজানের জীবনে জটিলতা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি, ঘটনার জেরে আলিবাবা-দাস্তান-ই-কাবুল ধারাবাহিক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শীজানকে। এবার আদালতেও এই মামলা শীজানের মুক্তির পক্ষে ক্রমাগত বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বৃহস্পতিবার শীজানের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে মহারাষ্ট্রের পালঘর আদালত।
প্রথম থেকেই শীজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি এই মামলার তদন্তে বিশেষ সহযোগিতা করছেন না। তবে এবার অভিনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আরও গুরুতর। অভিযোগ, তুনিশার সঙ্গে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপের বহু কথোপকথন মুছে দিয়েছেন শীজান। তাই মহারাষ্ট্রের পালঘর আদালত জানিয়েছে, অভিনেতা জামিন পেলে তিনি সাক্ষীদের হুমকি দিতে পারেন। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি, ভাসাই আদালতেও শীজানের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
আদালতের নির্দেশনামায় বলা হয়, তুনিশার মৃত্যুর ঠিক আগে মেকআপ রুমে এমন কিছু ঘটেছিল, যা অভিনেত্রীকে আত্মহত্যার পথে টেনে নিয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে শীজান খান বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।অভিনেতাকে থানের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর আলিবাবা-দাস্তান-ই-কাবুল-এর সেটে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অভিনেত্রী তুনিশা শর্মাকে। মেয়ের মৃত্যুর পর অভিনেত্রীর মা অভিযোগ করেন, শীজানের কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তাঁর মেয়ে। তুনিশার মা বনিতা শর্মা প্রশ্ন তুলেছিলেন, তুনিশাকে যখন মেকআপ রুম থেকে উদ্ধার করা হয়, তখনও তিনি বেঁচে ছিল, তারপর নিকটবর্তী হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে শীজান কেন তাঁকে দূরের হাসপাতালে নিয়ে গেলেন? যেখানে সেটের ৫ মিনিটের দূরত্বেই হাসপাতাল ছিল। তাঁর কথায়, এটা আত্মহত্যাও হতে পারে, আবার খুনও হতে পারে।
এদিকে সম্প্রতি তুনিশার সঙ্গে তাঁর মায়ের সম্পর্ক নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শীজান খানের দিদি ও মা। শীজানের অভিযোগ, তুনিশার সঙ্গে তাঁর মায়ের সম্পর্ক মোটেও ভালো ছিল না। পবন শর্মা, যিনি নিজেকে তুনিশার কাকা বলে দাবি করছেন, তাঁর সঙ্গে পরিবারের আদৌ কোনও সম্পর্ক নেই। প্রশ্ন তোলা হয় তুনিশার মা বনিতা ও কাকা পবন শর্মার সম্পর্ক নিয়েও। শীজানের অভিযোগ, তুনিশাকে জোর করে কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা করতেন তাঁর মা ও কাকা। তুনিশার টাকাপয়সাও এঁরাই দেখতেন। তুনিশাকে জোর করে কাজে পাঠানো হত। এমনও ঘটেছে যে তুনিশার কাছে খাবার খাওয়ার টাকাও থাকত না।
এমনকি শীজানের আইনজীবী আরও দাবি করেছেন, লকডাউনের সময় তুনিশাকে জোর করে চণ্ডীগড় পাঠাতে চেয়েছিলেন তাঁর মা ও ‘সো কলড’ কাকা। তুনিশা যেতে না চাইলে তাঁর শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করা হয়, মোবাইল ভেঙে দেওয়া হয়। তুনিশা নিজেই এসব পরিচালককে জানিয়েছিলেন।