বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাংলা। দেখতে দেখতে দু-দিন অতিক্রান্ত। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যু, অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তীর কাছে ব্যক্তিগত শোক। শ্যামল চক্রবর্তী কন্যা বড়ই হয়েছেন বুদ্ধ-মামার সান্নিধ্যে। আরও পড়ুন-ফ্রক পরা বাচ্চা মেয়েটিকে আদরে ভরাচ্ছেন ‘মামা’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য,খুদেকে চিনলেন?
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে স্মরণ করে শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত অ্যালবম থেকে এই বিরল শেয়ার করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। সেই ছবি দেখলে কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে যেতে হয়! নক্ষত্রখচিত এই ছবিটি উষসীর পাঁচ বছরের জন্মদিনের। ফুল মালায় সজ্জিত উষসী ছবির মধ্যমণি, যেন একদম কনের সাজ। ছবির বাঁ দিকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আর ডানদিকে অনিল বিশ্বাস দাঁড়িয়ে। উষসীর ঠিক পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁর বাবা, শ্যামল চক্রবর্তী।
ছবি শেয়ার করে ভাগ করে নেন মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মা-কে হারানোর যন্ত্রণা। উষসী লেখেন, ‘আমার পাঁচ বছরের জন্মদিন বেশ ঘটা করে হয়েছিল। জানি না কেন, আমার মায়ের শখ হয়েছিল মেয়ের জন্মদিনে সবাই আসবে হই হুল্লোড় হবে। তার আরও এক কারণ বোধহয় এটাও যে বহুদিন পাড়া ছাড়া, আত্মগোপন, বাবার জেল এই সবের পরে ওরা সবে তখন একটু থিতু হতে পেরেছিলেন। কিন্তু থিতাবস্তা আমার অ্যাক্টিভিস্ট মায়ের বেশীদিন সহ্য হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাসে মেয়ের জন্মদিন ঘটা করে প্রথমবার পালন করার পর সেই সেপ্টেম্বরে আমার মা আকাশের তারা হয়ে যান। জীবন অনিত্য। তাই ম্যাজিকাল’।
এরপর তাঁর সংযোজন, ‘যাই হোক ছোট্টবেলার সেই জন্মদিনের একটা ঐতিহাসিক ফ্রেম শেয়ার করলাম। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। আমার কোনো এক জন্মদিনের ছবি। একদম বাঁ দিকে দাঁড়িয়ে বুদ্ধ মামা ( বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) । একদম ডানদিকে অনিল কাকু (বিশ্বাস)। দাঁড়িয়ে বাঁ দিক থেকে তিন নাম্বার বাবা (শ্যামল চক্রবর্তী)। বসে ডান দিক থেকে দ্বিতীয় মা ( শিপ্রা ভৌমিক)। ছবিতে আরো আছে বেনী বাঁধা মিঠুদিদি ( দীনেশ মজুমদারের মেয়ে)…’।
সব শেষে ছবির একদম ডানদিকের খুদের সঙ্গে আলাপ করান উষসী। তিনি আর কেউ নন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও মীরা ভট্টাচার্যের পুত্র সুচেতন ভট্টাচার্য। শ্যামলী গুপ্তর ছেলে বিল্টুর কোলে চুপটি করে বসে রয়েছেন তিনি।
বুদ্ধদেবের মৃত্যুর পর উষসী জানান, ‘সততা, স্বচ্ছতার রাজনীতির দৃষ্টান্ত বুদ্ধবাবু। আমি বুদ্ধমামা বলতাম। সতীর্থরা তৈরি করে গিয়েছেন। একজন একজন করে চলে যাওয়া মানে, সেই ইতিহাসটাও কোথাও যেন মুছে যাওয়ার চেষ্টা হবে। সেটা যেন না হয়। সেই সততার রাজনীতি স্বচ্ছতার রাজনীতি যেন বজায় থাকে। রাজনীতি মানেই চুরি কিংবা অস্বচ্ছতা নয়। বুদ্ধবাবুর প্রজন্ম এটা প্রমাণ করে দিয়ে গিয়েছেন। একথা মনে রাখতে হবে। তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে হবে। সেটাই বুদ্ধমামার প্রতি আমাদের সকলের সঠিক শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হবে। আমার কাছে এটা ব্যক্তিগত ক্ষতি। ছোটবেলায় নানারকম স্মৃতির মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি।’