উত্তম কুমার বাঙালির মহানায়ক।bমৃত্যুর এতগুলো বছর পরেও তিনি ভীষণ রকমভাবে প্রাসঙ্গিক, বাঙালির জীবনে। মৃত্যুর পর নাকি রাজ্য সরকারের তরফে যোগ্য সম্মানটুকু পাননি বাঙালির ম্যাটিনি আইডল, সম্প্রতি এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন উত্তম কুমারের পরিবারের দুই সদস্য। প্রয়াত তারকা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তুলনা টেনে মহানায়কের নাতবউ দেবলীনা কুমার ও নাতনি মউ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, বামশাসনে যথাযোগ্য সম্মানে শেষবিদায় জানানো হয়নি তাঁকে।
মাসখানেক আগেই উত্তর কুমারের বাড়ির বউ হয়েছেন অভিনেত্রী দেবলীনা কুমার। যিনি সদ্য নির্বাচিত রাসবিহারী কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমারের কন্যাও বটে। দেবলীনা ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেন, যার বক্তব্য- ‘আজ বিরোধী শাসকের আমলে তথাকথিত বামপন্থী অভিনেতা সৌমিত্রবাবু নিজের যোগ্য সম্মানটুকু পেলেন, কিন্তু ভামবিড়াল শাসকদের আমলে উত্তমবাবুর সেই সৌভাগ্য হয়নি’। সেই পোস্টে রবীন্দ্রসদনে শায়িত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহের ছবি এবং উত্তম কুমারের মরদেহের ছবি রয়েছে। পোস্টে আরও লেখা রয়েছে ‘কমরেড প্রমোদ দাশগুপ্তের নির্দেশে উত্তমের মরদেহ রবীন্দ্রসদনে রাখা যায় নি’। এই পোস্ট শেয়ার করে, দেবলীনা কুমার লেখেন- ‘আমরা শিল্পীদের মধ্যে ভেদাভদ করি না’।
অন্যদিকে উত্তম কুমারের পৌত্রী মউ, বৌদির পোস্ট শেয়ার করে লেখেন- ‘একদম সত্যি… দাদুকে একটাও সম্মান দেওয়া হয়নি তখন… আমাদের বাবার মুখে শুনেছিলাম, দাদুর মরদেহ যাতে রবীন্দ্র সদনে রাখার জন্য পরিবারের থেকে আবেদন জানিয়েছিলেন কারণ এতো ভিড় হচ্ছিল যে বাড়ির দরজা ভেঙে পড়েছিল, ওঁনাকে ভালো করে কেউ দেখতে পাচ্ছিল না। কিন্তু তাকে সেই সময় কেউ সাহায্য করেনি… খুব দুর্ভাগ্যজনক আমাদের পরিবারের জন্য…. কিন্তু তখন যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (আমার পিসি) থাকতেন, তাহলে হয়তো উনি রাজার মতন যেতেন… ওঁনার মহদেহর সামনে গান স্যালুট করা হত’।
দাদুর যোগ্য সম্মান না পাওয়ার আক্ষেপ এইভাবেই রাখলেন উত্তম পুত্র গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের ছোট মেয়ে। শিল্পীদের নিয়ে রাজনীতি নতুন কোনও ঘটনা নয়, তবে উত্তম কুমারের শেষকৃত্য নিয়ে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের মনে যে চাপা ক্ষোভ যে মহানায়কের মৃত্যুর ৪১ বছর পরেও রয়ে গেছে, তা স্পষ্ট করে দিল এই ফেসবুক পোস্ট।