চলে গেলেন ভারতীয় থিয়েটার জগতের প্রবাদ প্রতিম ব্যক্তিত্ব ডাঃ শ্রীরাম লাগু। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। পুণেতে নিজ বাসভবনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা।
মঞ্চের পাশাপাশি বলিউড এবং মরাঠি ছবিতেও দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। পেশায় ইএনটি বিশেষজ্ঞের নেশা ছিল অভিনয়। ডাঃ শ্রীরাম লাগুর বিখ্যাত মারাঠি নাটক ‘নটসম্রাট’ গোটা দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। ‘ঘাসিরাম কোতোয়াল’-সহ বিজয় তেণ্ডুলকরের একাধিক নাটকে ডাঃ লাগু অভিনয় করেছেন।
একসময় বলিউডের বহু জনপ্রিয় ছবিতেও চরিত্রাভিনেতার ভূমিকায় থেকেছেন। অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন, উত্তমকুমারের মতো ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে। ১৯৭৮ সালে সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে 'ফিল্মফেয়ার' পুরস্কার পান শ্রীরাম লাগু, ঘরোন্দা ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য এই সম্মান আসে তাঁর ঝুলিতে।এছাড়া কালিদাস সম্মান, সঙ্গীত নাটক আকাডেমির ফেলোশিপে ভূষিত হয়েছেন তিনি।।
বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকার সহ পরেশ রাওয়াল, উর্মিলা মাতোন্ডকর, ঋষি কাপুরের মতো বলিউড তারকারা।
টুইটারের দেওয়ালে জাভেরকর লেখেন,'মহান শিল্পী শ্রীরাম লাগুকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। আমরা হারালাম এক বহুমুখী ব্যক্তিত্বকে। অনন্য মঞ্চ অভিনেতা যিনি রুপোলি পর্দাতেও প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি একজন সমাজকর্মীও ছিলেন।
পরেশ রাওয়াল টুইট করেন, 'মহান থিয়েটার অভিনেতা ডাঃ শ্রীরাম লাগু আর আমাদের মধ্যে নেই। ওম শান্তি'।
ঋষি কাপুর টুইট বার্তায় জানান, 'ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম স্বতঃস্ফূর্ত অভিনেতা, শ্রীরাম লাগু আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। বহু আগে অনেক কাজ করেছি, তবে গত ২৫-৩০ বছরে ওঁনার সঙ্গে কোনও কাজ করা হয় নি। পুণেতে নিজের বাড়িতেই অবসর জীবন কাটালেন তিনি। অনেক ভালোবাসা লাগু সাহাব'।
উর্মিলা মাতোন্ডকর ডাঃ লাগুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, 'মরাঠি থিয়েটারের অন্যতম সেরা এবং দায়বদ্ধ অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন দায়িত্বশীল সমাজকর্মীও ছিলেন। কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই সবাই মনে রাখবে। আার চোট্ট আঙুল ধরে উনি আমাকে রূপোলি পর্দার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন জাকোল-এ। তোমাকে খুব মিস করব 'নটস্রমাট'।
ডাঃ শ্রীরাম লাগুর পুত্র আমেরিকা থেকে ফিরলে তাঁর শেষকৃত্যের প্রস্তুতি শুরু হবে।